‘যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত: বহু গন্তব্যে পৌঁছানো এবং সামনের পথনির্দেশ’ শিরোনামে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নে এই উত্তর আসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তি রিচার্ড ভার্মার কাছ থেকে।
Published : 18 Sep 2024, 12:12 AM
বাংলাদেশ কোন দিকে যাচ্ছে তা নিয়ে মন্তব্য করার সময় এখনও আসেনি বলে মন্তব্য করে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসোর্সেস বিষয়ক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ড ভার্মা বলেন, দেশটিকে সহযোগিতা করাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সোমবার ওয়াশিংটনে হাডসন ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমি মনে করি, (বাংলাদেশ) কোন পথে যাচ্ছে, তা বলার সময় এখনও হয়নি।
“আমি মনে করি, শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পালাবদলে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতির কথা বলতে আমাদের প্রতিনিধি দল সেখানে গিয়েছে। আমি মনে করি, এটাই এখনকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।”
‘যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত: বহু গন্তব্যে পৌঁছানো এবং সামনের পথনির্দেশ’ শিরোনামে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নে এই উত্তর আসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তি রিচার্ড ভার্মার কাছ থেকে।
অনুষ্ঠানে তাকে প্রশ্ন করা হয়- “আমি বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চাই। সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী? শেখ হাসিনাকে বিতাড়িত করার পর থেকে অনেক উগ্র বক্তব্য আসছে, সংখ্যালঘুদের আক্রমণ করা হচ্ছে। আপনি এখানকার ভবিষ্যৎ কীভাবে দেখছেন?”
“এমনকি তারা পাকিস্তানের সঙ্গে একটি চুক্তির কথাও বলছে, যেখানে পাকিস্তান বাংলাদেশকে পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে সুরক্ষা দেবে। সুতরাং এ ধরনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড হচ্ছে। এটা অবশ্যই ভারতের জন্য খুবই উদ্বেগের। যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন জানতে চাচ্ছি।”
উত্তরে রিচার্ড ভার্মা বলেন, “আমাদের একটি প্রতিনিধি দল মাত্রই বাংলাদেশ সফর করে ফিরেছে এবং কঠিন এই সময়ে জনগণের জন্য অতিরিক্ত মানবিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।”
২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে দুই বছর ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা এই কূটনীতিক বলেন, “আমি মনে করি, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ ও আইনি পালাবদলে সহযোগিতার চেষ্টা করা। আমার মনে হয়, এটা সবার স্বার্থেই। এটা এক ধরনের দৈনন্দিন দৃষ্টিভঙ্গি।
“আশা করি, নিরাপত্তা ফিরে আসবে, আইনশৃঙ্খলা ঠিক হবে এবং মানুষ মৌলিক অর্থনৈতিক সেবা পাবে। এবং এটা দীর্ঘমেয়াদি কাজ।”
রিচার্ড ভার্মা বলেন, “কীভাবে-কখন নির্বাচন করতে চায় আর অন্তর্বর্তী সরকার কতদিন থাকে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজ বাংলাদেশের জনগণের। আমি মনে করি, এই গণতান্ত্রিক পথযাত্রায় আমরা কীভাবে সহায়তা করতে পারি, সেটা নিয়ে জনগণের পাশে থাকা আমাদের দায়িত্ব।”
সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে তিনি বলেন, “আক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ, খোলামেলাভাবে বললে যে কোনো বেসামরিক মানুষের ওপর হলেই সেটা উদ্বেগের। আমরা মনে করি, আমাদের এটা খুব গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে।”
প্রবল গণআন্দোলন ও জনরোষের মুখে ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার, যার নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
ইউনূস সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার কথা হচ্ছে; পাশাপাশি পাকিস্তানের কূটনীতিকদের তৎপরতাও দেখা যাচ্ছে।
তবে ইউনূস সরকারকে নানা বিষয়ে সহযোগিতার বার্তা নিয়ে প্রথম রাষ্ট্রীয় প্রতিনধি দল পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র; যারা এরই মধ্যে সংস্কার কাজে বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন ঘোষণাও দিয়ে গেছে।