পরীক্ষক, নিরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকের বিরুদ্ধে গাফিলতির প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি।
Published : 14 Nov 2024, 11:11 PM
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে ১ হাজার ২৭৩ পরীক্ষার্থী ফেইল থেকে পাস করেছেন। আর ৭০৪ জন নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন, এর মধ্যে দুই পরীক্ষার্থী রয়েছেন যাদের আগে ফেইল এসেছিল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাধারণ নয়টি শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পুনর্নিরীক্ষণের ফলাফল প্রকাশ করেছে।
এইচএসসির ফলাফলে 'অসন্তুষ্ট' হয়ে এবার ১ লাখ ৯৮ হাজার ১১৬ পরীক্ষার্থী ৫ লাখ ৮ হাজার ১১৬টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণ বা রিভিউয়ের আবেদন করেছিলেন। তবে কারও খাতা নতুন করে মূল্যায়ন না করে বিভিন্ন প্রশ্নের নম্বর নতুন করে যোগ করা হয়েছে বলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জানিয়েছেন।
মূলত পরীক্ষক, নিরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকরা ‘খাতায় নম্বর যোগ করতে ভুল করার’ এমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
পুনর্নিরীক্ষণের ফলে দেখা গেছে, ঢাকা বোর্ডে ১৩৭ জন পরীক্ষার্থী ফেইল থেকে পাস করেছেন। ফেল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন একজন পরীক্ষার্থী। আর নতুন করে মোট ২০০ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। ঢাকা বোর্ডে সর্বোচ্চ ৫৯ হাজার ৬৭৮ জন পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৮০ হাজার ৬০টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছিলেন।
বরিশাল বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছেন একজন পরীক্ষার্থী। খাতা পুনর্নিরীক্ষণে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২৯ জন পরীক্ষার্থী। মোট ৮৯ জন পরীক্ষার্থীর গ্রেড পরিবর্তন হয়েছে এ বোর্ডে। বরিশাল বোর্ডের ৭ হাজার ২১ জন পরীক্ষার্থী ২৪ হাজার ২৬৫টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছিলেন।
সিলেট বোর্ডের ১৫ জন পরীক্ষার্থী ফেল থেকে পাস করেছেন। এ বোর্ডে পাঁচজন পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এ বোর্ডের ৬ হাজার ৩০৬ জন পরীক্ষার্থী ১০ হাজার ৬৯টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছিলেন।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ৬১ জন শিক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। ফেল থেকে পাস করেছেন ১০১ জন পরীক্ষার্থী। চট্টগ্রাম বোর্ডের ২২ হাজার ৩২৪ জন পরীক্ষার্থী ৬৮ হাজার ২৭১টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছিলেন।
ময়মনসিংহ বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছেন ৫৯৯ জন। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩২৩ জন। আর একজন শিক্ষার্থী ফেল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। ময়মনসিংহ বোর্ডের ১৮ হাজার ৬৯৯ জন পরীক্ষার্থী ৪৬ হাজার ২৪১টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছিলেন।
যশোর বোর্ডের ফেল থেকে পাস করেছেন ২১ জন পরীক্ষার্থী। আর নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৩ জন। এ বোর্ডের ২৪ হাজার ২২১ জন পরীক্ষার্থী ৬৬ হাজার ৫৮টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছিলেন।
কুমিল্লা বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছেন ৯৩ জন পরীক্ষার্থী। আর নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩৬ জন পরীক্ষার্থী। এ বোর্ডের ২১ হাজার ৬১৪ জন পরীক্ষার্থী ২১ হাজার ৬১৪টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছিলেন।
রাজশাহী বোর্ডের ১৪ জন পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। আর ফেল থেকে পাস করেছেন ৯ জন পরীক্ষার্থী। এ বোর্ডের ১৫ হাজার ৩৭৮ জন পরীক্ষার্থী ৩৯ হাজার ২৬৩টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছিলেন।
দিনাজপুর বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছেন ২৪ জন পরীক্ষার্থী। ১২ জন পরীক্ষার্থী নতুন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। দিনাজপুর বোর্ডের ১৪ হাজার ৫২৫ জন পরীক্ষার্থী ৩৭ হাজার ৬৩৯টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছিলেন।
আলিমের ১০ জন পরীক্ষার্থী ফেল থেকে পাস করেছেন। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬ জন পরীক্ষার্থী। ২ হাজার ৭১৪ জন আলিম পরীক্ষার্থী ৭ হাজার ৮১৪টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছিলেন।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি ভোকেশনাল, বিএম ও ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে ফেল থেকে পাস করেছেন ২৬৩ পরীক্ষার্থী। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন পাঁচজন। এ বোর্ডে ৫ হাজার ৯০৮ জন পরীক্ষার্থী ৬ হাজার ৮২২টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছিলেন।
এইচএসসির খাতা মূল্যায়নে পরীক্ষক, নিরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকের বিরুদ্ধে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, পরীক্ষক, নিরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকের বিরুদ্ধে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের ‘কালো তালিকাভুক্ত’ বা পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হবে।
“এই সময়ে তারা পরীক্ষক, নিরীক্ষক বা প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব পাবেন না। গত বছরও আমরা গাফিলতি করা পরীক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি।”