কর্তৃপক্ষকে প্রতি তিন মাস পরপর এ বিষয়ে আপডেট রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
Published : 16 Jul 2024, 08:25 PM
মালয়েশিয়া যেতে না পারা ১৭,৭৭৭ জন শ্রমিকের টাকা সুদসহ কেন ফেরত দেওয়ার আদেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট।
একইসঙ্গে রুলে এসব শ্রমিকের ‘জীবন ধ্বংসের’ জন্য কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা এবং খামখেয়ালিপনাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া কর্তৃপক্ষকে প্রতি তিন মাস পরপর এ বিষয়ে হালনাগাদ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন তুষার কুমার রায়।
তবে এর আগে সরকার এই কর্মীদের টাকা ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্টদের।
চূড়ান্ত ছাড়পত্র পাওয়ার পরেও ১৭,৭৭৭ জন কর্মী মালয়েশিয়া যেতে না পারার ঘটনায় করা একটি রিটের শুনানির পর আদেশের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য ছিল।
এসব কর্মী মালয়েশিয়া যেতে না পারায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা সাত দিনের মধ্যে আদালতকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। সে অনুযায়ী রাষ্ট্রপক্ষ একটি প্রতিবেদন সোমবার আদালতে দাখিল করে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীদের কাছ থেকে গ্রহণ করা সমুদয় অর্থ ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে ফেরত দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া কর্মী প্রেরণে ব্যর্থতা ও দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রতিবেদনে কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে; যার মধ্যে রয়েছে, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করা দরকার, যাতে চাহিদাপত্র ইস্যু থেকে কর্মীর বিদেশ গমন ও পরবর্তী পরিস্থিতি তদারকি করা যায়। এই সিস্টেমে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ, বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসমূহ এবং রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহ সংযুক্ত থাকতে পারে। মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগের অনুমতি গ্রহণের পর বিএমইটির (জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরো) ক্লিয়ারেন্স কার্ড গ্রহণ এবং কর্মী প্রেরণের বিষয়টি নির্দিষ্টকরণ করা। রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহ কর্তৃক অভিবাসী কর্মীদের কাছ থেকে অভিবাসন ব্যয় গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং ই-ভিসাপ্রাপ্ত যেসব কর্মী মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে পারেননি, তাদের বিষয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশন কর্তৃক সে দেশের সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখা।
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো নিয়ে সংকটের কারণ অনুসন্ধানে গত ২ জুন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মো. মাহবুবুল হককে প্রধান করে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছিল প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, সে দেশে যাওয়ার অনুমোদন পাওয়া বাংলাদেশি কর্মীদের প্রবেশের শেষ দিন ছিল ৩১ মে। এরপর কর্মী ভিসায় আর কেউ দেশটিতে ঢুকতে পারবেন না।
এই সুযোগে কিছু এজেন্সির যোগসাজশে এই রুটের বিমান ভাড়া ৩০ হাজার টাকা থেকে কয়েক গুণ বেড়ে লাখ টাকার বেশি হয়ে যায়।
ওই অবস্থায় সব কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও কয়েকহাজার কর্মী যেতে পারেননি। তাদের মধ্যে কেউ পাননি টিকিট, কেউবা এজেন্সির প্রতারণার শিকার। ৩১ মে দিনভর বিমানবন্দরে অবস্থান করে স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা নিয়ে ফিরে যান কয়েকশ মানুষ।
মালয়েশিয়ার স্বপ্নভঙ্গ: ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে না যেতে পারাদের অর্থ ফের