কূটনীতিকদের সুরক্ষা স্বাগতিক দেশকেই নিশ্চিত করতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, সৌদি আরবসহ ছয় দেশের মিশন প্রধানদের চলাচলের ক্ষেত্রে দেওয়া বাড়তি নিরাপত্তা সুবিধা (পুলিশ এসকর্ট) প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 May 2023, 10:49 AM
Updated : 16 May 2023, 10:49 AM

বাংলাদেশে ছয়টি দেশের কূটনীতিকের বাড়তি নিরাপত্তা প্রত্যাহারের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বলছে, ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী যেকোনো স্বাগতিক দেশকে সব কূটনৈতিক মিশন ও কর্মীদের সুরক্ষা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্র দপ্তরের উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল এ কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, সৌদি আরবসহ ছয় দেশের মিশন প্রধানরা চলাচলের ক্ষেত্রে বাড়তি যে নিরাপত্তা সুবিধা (পুলিশ এসকর্ট) এতদিন পেয়ে আসছিলেন, তা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যায় সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “প্রতিটি দূতাবাসেই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা বিধান অব্যাহত রেখেছেন এবং রাষ্ট্রদূতদের পুলিশ প্রদত্ত গানম্যান নিয়োজিত আছেন।”

কয়েক বছর আগে কয়েকজন বিদেশি কূটনীতিককে অলিখিতভাবে গাড়িসহ তাদের যাতায়াতে বাড়তি লোকবল দেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বর্তমানে বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং নিয়ন্ত্রণাধীন আছে। তাই তাদেরকে বাড়তি নিরাপত্তা প্রদানের কোনো আবশ্যকতা নাই।

“পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর কার্যপরিধি বৃদ্ধির জন্য এই বাড়তি সুবিধাটি এখন অব্যাহত রাখা যাচ্ছে না। এখানে স্মরণ করা যেতে পারে যে, পৃথিবীর কোনো দেশেই বাংলাদেশের কোনো রাষ্ট্রদূতকে বাড়তি নিরাপত্তা ও চলাচলের ক্ষেত্রে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো সুবিধা প্রদান করা হয় না।”

বাংলাদেশের এই পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্র ঢাকায় দেশটির কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কিনা, এমন প্রশ্নে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, “আমি যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ও এর কর্মীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলোর দিকে যাচ্ছি না।

“তবে, আমি উল্লেখ করতে চাই, সব স্বাগতিক দেশকে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী সব কূটনৈতিক মিশন ও কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের বাধ্যবাধকতা অবশ্যই মানতে হবে এবং কর্মীদের উপর কোনো ধরনের আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের কূটনৈতিক কর্মী এবং স্থানসমূহের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়গুলো সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।”

বিদেশি কুটনীতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে কিছু ‘বিভ্রান্তিকর’ তথ্য নজরে আসার কথা জানিয়ে সোমবার রাতেই এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টির ব্যাখ্যা দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

তাতে বলা হয়, প্রতিটি দূতাবাসেই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা বিধান অব্যাহত রেখেছে এবং রাষ্ট্রদূতদের পুলিশের দেওয়া গানম্যানও নিয়োজিত রয়েছে। নিরাপত্তা প্রত্যাহার সম্পর্কিত এই ‘বিভ্রান্তিকর খবরটি সঠিক নয়’। 

Also Read: ছয় রাষ্ট্রদূতের চলাচলে ‘বাড়তি নিরাপত্তা’ আর দেবে না সরকার

সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু দূতাবাস থেকে একই ধরনের সুবিধার জন্য অনুরোধ পাওয়ার কথা জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “এ লক্ষ্যে তাদের সকলের সুবিধার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ আনসার বাহিনীতে একটি চৌকস দল তৈরি করেছে। বিদেশি কূটনীতিকরা তাদের খরচে এ সুবিধাটি গ্রহণ করতে পারবেন।

“কোনো দূতাবাস আনসার সদস্যদের এই সুবিধা অব্যাহত রাখতে চাইলে বা বাড়তি সুবিধা নিতে চাইলে আমাদেরকে লিখিতভাবে জানালে আমরা সেই ব্যবস্থাটি গ্রহণ করব,” বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।