চলতি মাসের ২১ ও ২২ জুন এই সফর হতে যাচ্ছে।
Published : 14 Jun 2024, 10:41 PM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নতুন মেয়াদে প্রথম দ্বিপাক্ষিক ভারত সফরের আলোচ্যসূচিতে তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানানো হয়েছে।
চলতি মাসের ২১ ও ২২ জুন এই সফর হতে যাচ্ছে জানিয়ে শুক্রবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে বসবেন, পাশাপাশি জয়শঙ্করের (ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী) সঙ্গে বৈঠক রয়েছে। সেখানে অনেকগুলো গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
“বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর সঙ্গে তিস্তাসহ দুই দেশের মধ্যে প্রবাহিত অভিন্ন নদীর পানি ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।”
গত ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে জিতে টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রীর পদে আসা শেখ হাসিনার এই মেয়াদে এটি প্রথম ভারত সফর। আর ভারতেও প্রধানমন্ত্রী পদে টানা তৃতীয়বারের মত শপথ নিয়েছেন মোদী।
এটি হবে চলতি মাসেই প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় ভারত সফর। দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনে জিতে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়া মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত ৮ থেকে ১০ জুন প্রতিবেশী দেশটিতে যান শেখ হাসিনা।
দ্বিপক্ষীয় সফর না হলেও ওই সফরে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শেখ হাসিনার বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
শেখ হাসিনার শেষ দ্বিপাক্ষিক সফর ছিল ২০২২ সালে। ওই বছরের ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর সেই সফরে দুই দেশের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারক সই হয়, আলোচনা হয় নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান, মানব পাচার রোধ।
২০২৩ সালের ৮ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা আবার ভারত যান জি টোয়েন্টি সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে। এই সফরেও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয় তার। সই হয় তিনটি সমঝোতা স্মারক।
শেখ হাসিনা ও মোদীর শাসনামলে দুই দেশ ‘সম্পর্কের নতুন উচ্চতায়’ পৌঁছেছে বলে দুই পক্ষ থেকেই বার্তা এসেছে। এক দেশের ভেতর অন্য দেশের ছিটমহল বিনিময়ের পর দুই দেশের স্থল সীমানা নির্ধারিত হয়েছে। অমীমাংসিত আরও অনেক সমস্যার সমাধানে দুই পক্ষ কাছাকাছি এসেছে।
তবে আগের তুলনায় কমলেও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে হত্যা শূনে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হয়নি; তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে আটকে যাওয়া চুক্তি সইয়ে অগ্রগতি হয়নি।
গত দেড় দশকে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় প্রায় প্রতিটি আলোচনাতেই এই চুক্তি নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছার আশাবাদের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু নানা জটিলতায় শেষ পর্যন্ত তা আটকেই আছে।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের আগে দুই দেশের পানি সম্পদ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়ে দুইপক্ষ একমত হয়েছিল।
মনমোহন সিংয়ের সফরেই বহু প্রতীক্ষিত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতায় তা আটকে যায়।