তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন আছে।
Published : 01 Nov 2024, 03:51 PM
রাজধানীতে নিখোঁজের একদিন বাদে ধোলাইপাড় ফ্লাইওভারের উপর থেকে সোহেল মিয়া নামের এক গাড়ি চালকের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতের গাড়ি সবুজবাগের একটি গ্যারেজে পাওয়া গেছে, যেখানে তার স্যান্ডেলসহ রক্তাক্ত কিছু আলামত মিলেছে।
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার আকনকান্দি গ্রামের সোহেল পরিবার নিয়ে সবুজবাগের কদমতলা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে।
যাত্রাবাড়ী থানার এসআই আমির হোসেন বলেন, “সিকিউরিটি গার্ডদের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে ফ্লাইওভারের উপর থেকে গাড়ি চালক সোহেল মিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।
“নিহতের মাথায় কাটা জখম, কপালে ও ডান কাঁধে ক্ষত চিহ্ন, নাক থেঁতলানো জখমসহ একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।”
৩৮ বছর বয়সী সোহেল মিয়ার গাড়িটি তার নিজের, যেটি তিনি ভাড়ায় চালাতেন। বৃহস্পতিবার গাড়িটি মেরামতের জন্য সবুজবাগের একটি গ্যারেজে যান। এরপর আর বাড়ি ফেরেননি। এ নিয়ে ওই দিনই তার স্ত্রী শারমিন সুলতানা সবুজবাগ থানায় জিডি করেন।
এসআই আমির বলেন, সোহেল মিয়ার নিখোঁজের বিষয়ে বৃহস্পতিবার তার স্ত্রী জিডি করেছিলেন। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতালে নিহতের স্ত্রী শারমিন সুলতানা বলেন, “আমার স্বামী প্রাইভেট কার চালাতেন। আমাদের নিজেদেরই গাড়ি। বৃহস্পতিবার বিকালে গাড়িটির কাজ করানোর জন্য সবুজবাগের বাসাবো ঝিলপাড় এলাকায় গ্যারেজে যান।
“বিকাল ৪টা পর্যন্ত তার সাথে কথা হয়। এরপর থেকে তাকে আর মোবাইলে পাওয়া যায়নি। পরে সেখানে মিস্ত্রি রুবেলের সাথে কথা হয়। সে জানায়, ‘তিনি চলে গেছেন’। কিন্তু সে (সোহেল) বাসায় আসেনি। গাড়িটি গ্যারেজেই রয়েছে।”
পরে গ্যারেজে গিয়ে রুবেলের সঙ্গে ফের কথা হয় জানিয়ে শারমিন বলেন, “এর সাথে আবার কথা বলি। তখন তার আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় আমি বলি, ‘থানায় জিডি করব’। তখন সে বলে, ‘জিডির দরকার কী, প্রয়োজন হলে আপনি কেন, আমি করব’।
“বিষয়টি সবাইকে জানাচ্ছি কেন, এসব নিয়ে তার সাথে তর্কাতর্কি হয়। পরে রাতেই সবুজবাগ থানায় জিডি করি। আর ড্রাইভারদের ফেইসবুক গ্রুপগুলোতে তার নিখোঁজের সংবাদ দেওয়া হয়।”
জিডির পর পুলিশ ওই গ্যারেজে গিয়ে তল্লাশি করেছে জানিয়ে শারমিন বলেন, “সেখানে তাকে পাওয়া না গেলেও গ্যারেজে কিছু রক্তের চিহ্ন দেখা গেছে, তার (সোহেলের) ব্যবহৃত স্যান্ডেল ও ঘড়ি পাওয়া গেছে ।
“তখন রুবেলের প্রতি সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। এরই মধ্যে রুবেল তার মোবাইল বন্ধ করে রেখেছে। তাকে আর পাওয়া যায়নি।”
চালক সোহেলের স্ত্রী শারমিন বলেন, “আজ সকালে ড্রাইভারদের ফেইসবুক গ্রুপের মাধ্যমে সংবাদ পাই- ধোলাইপাড় ফ্লাইওভারের উপরে একটি লাশ পাওয়া গেছে। পরে সেখানে গিয়ে দেখতে পাই, সেটিই আমার স্বামী সোহেলের লাশ।”
সোহেল মিয়াকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, তার ধারণা, সোহেলকে গ্যারেজে আঘাত করা হয়, পরে মারা যাওয়ায় লাশ ফেলে রেখে আসে।
কয়েকজন মিলে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে বলে সন্দেহ শারমিনের।