আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন গালিবের এ আদেশ দেন।
Published : 13 Jan 2025, 12:24 PM
দুদকের মামলায় সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমির হোসেন বলেন, গত ১ জানুয়ারি তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসিফ আল মাহমুদ।
“আজ আদালত গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।”
এর মধ্যে রোববার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হেনরীর জমি, ফ্ল্যাটসহ ৪৫টি স্থাবর সম্পদ ও ১৬টি গাড়ি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত।
এছাড়াও তার ১৯ ব্যাংক হিসাবে থাকা প্রায় ৫৭ কোটি টাকা ও যৌথ মালিকানাধীন চারটি কোম্পানির ১ লাখ ২০ হাজার ৫০০ শেয়ার অবরুদ্ধেরও আদেশ দেওয়া হয়েছে।
জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামী শামীম তালুকদার লাবুর বিরুদ্ধে ‘অবৈধভাবে’ ৭৮ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ২৩ ডিসেম্বর পৃথক দুটি মামলা করে দুদক।
দুদকের ঢাকা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ একটি এবং আরেকটি সহকারী পরিচালক শাহ আলম শেখ দুদকের পাবনা কার্যালয়ে হেনরীর স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এ দম্পতির ব্যাংক হিসাবে ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্যও পেয়েছে দুদক। সেইসঙ্গে হেনরীর ১৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ মার্কিন ডলার লেনদেনের তথ্যও রয়েছে এজাহারে।
দুদক বলছে, ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে’ ৫৭ কোটি ১৩ লাখ ৭ হাজার ২২৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন হেনরী। তার স্বামীর অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ২০ কোটি ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার ২১৫ টাকা।
এজাহারে বলা হয়েছে, হেনরী ‘অবৈধভাবে’ অর্জিত অর্থ বা সম্পত্তির উৎস গোপন করতে ৩৫টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২ হাজার ২ কোটি ৬৬ লাখ ৫৭৭ টাকা ও ১৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ মার্কিন ডলারের সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
আর হেনরীর ‘অপরাধলব্ধ অর্থ’ থেকে ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদের মালিক হয়েছেন শামীম। তার ১৪টি ব্যাংক হিসাবে ৩০৬ কোটি ৬৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬০ টাকার টাকার ‘সন্দেহজনক’ লেনদেন হয়েছে।
এরপর দুদকের আবেদনে গত ২৫ নভেম্বর হেনরী, তার স্বামী ও মেয়ে মুনতাহা রিদায়ী লামের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে হেনরীর বিরুদ্ধে গত ২০ অগাস্ট দুদক অনুসন্ধান শুরু করে। এরপর গত ৩০ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার থেকে স্বামীসহ তিনি গ্রেপ্তার হন।
শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতিতে আসা হেনরী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-২ আসনে নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য হন। ২০০৮ সালে সিরাজগঞ্জের সবুজ কানন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক থেকে সরাসরি সংসদ নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেন। যদিও সেই নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থী রুমানা মাহমুদের কাছে হেরে গিয়েছিলেন।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর হেনরী সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হন। সেসময় ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি এবং অন্যান্য ঘটনায় তার নাম আলোচনায় আসে। হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করে দুদক।
আরো পড়ুন
হেনরীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ
'অবৈধ সম্পদ': হেনরী ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
সিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি হেনরী গ্রেপ্তার ৩টি হত্যাসহ চার মামলায়
সিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি হেনরী গ্রেপ্তার
সিরাজগঞ্জে সাবেক এমপি মুন্না, হেনরী ও সচিব অপুর বিরুদ্ধে ৩ হত্যা মামলা
স্বামীসহ ৭ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি হেনরী
স্বামী-সন্তানসহ সাবেক এমপি হেনরীর দেশত্যাগে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা