জেমির পালানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর সোমবার রাতে বুয়েটে বিক্ষোভ দেখান কয়েক শ শিক্ষার্থী।
Published : 25 Feb 2025, 11:55 AM
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুনতাসির আল জেমির কারাগার থেকে পালানোর ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
সোমবার রাতে কারা অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবরার হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বন্দির কারাগার থেকে পলায়ন সংক্রান্ত খবরের প্রতি কারা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। জনমনে বিভ্রান্তি নিরসনের লক্ষ্যে কারা কর্তৃপক্ষ এই ব্যাখ্যা দিচ্ছে।
সেখানে বলা হয়, নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার আব্দুল মজিদের ছেলে মুনতাসির আল জেমি (২৬) গাজীপুরের হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত এই বন্দির কয়েদি নম্বর-৫১৭৭।
গণঅভ্যুত্থানে সরকারপতনের পরদিন গত ৬ অগাস্ট কারাগারের দেয়াল ভেঙে পালিয়ে যান ওই কারাগারের ২০২ জন বন্দি। তাদের মধ্যে জেমিসহ ৮৭ জন ছিলেন মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত কয়েদি।
ঘটনার নয় দিন পর ১৫ অগাস্ট এ ব্যাপারে কোনাবাড়ি থানায় মামলা করে কারা কর্তৃপক্ষ। পালিয়ে যাওয়া কয়েদিদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের ৩৫জনসহ মোট ৫১জনকে গ্রেপ্তার করে ফের কারাগারের পাঠানো সম্ভব হয়েছে। তবে জেমিকে এখনো ধরতে পারেনি আইন-শৃংখলা বাহিনী।
কারা অধিদপ্তর বলছে, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক সংশ্লিষ্ট বন্দিকে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্ট অব্যাহত রয়েছে।”
আবরার হত্যা মামলায় দণ্ডিত যে ২২ জনকে কারাগারে রাখা হয়েছিল, তাদের মধ্যে বাকি ২১ জন এখন কারাগারেই আছেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এদিকে জেমির পালানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর সোমবার রাতে বুয়েটে বিক্ষোভ দেখান কয়েক শ শিক্ষার্থী। রাত ১১টার দিকে তারা বুয়েট শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন হল প্রদক্ষিণ করেন। পরে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সেখানে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বুয়েটের ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু ওবাইদা মায়াজ ও আরাফাত সাকিব।
সেখানে বলা হয়, ২৪ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্টে আবরার হত্যা মামলার শুনানিতে বিচারক বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জেমি ৫ অগাস্টের পর থেকে পলাতক থাকায় তার পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে লড়ছেন না।
এ ঘটনাকে আবরার ফাহাদের সঙ্গে ‘প্রতারণা এবং বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেন শিক্ষার্থীরা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “ফাঁসির আসামিদের স্থান নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে আবৃত কনডেম সেল। সেখান থেকে এত শীর্ষ সন্ত্রাসীর পলায়ন ন্যক্কারজনক এবং আমাদের জন্য লজ্জার।”
২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর আবরার ফাহাদকে রাতভর নির্যাতন করে হত্যা করে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী।
ওই ঘটনায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী জেমিসহ ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।