বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
Published : 05 Feb 2025, 08:27 PM
দেশে প্রতিবছর তামাকের কারণে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হলেও এসব মৃত্যুর দায়ভার তামাক কোম্পানিগুলো কখনই স্বীকার করে না বলে অভিযোগ করেছে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা)।
কোম্পানিগুলো তামাকজনিত মৃত্যু আড়াল এবং ব্যবসা বাড়াতে নানাধরনের কূটকৌশল অবলম্বন করে। সেজন্য বাংলাদেশে তামাক কোম্পানিগুলোর প্রকৃত উদ্দেশ্য উন্মোচন করতে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে অভিমত জানানো হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
রাজধানীর বিএমএ ভবনে মঙ্গল ও বুধবার অনুষ্ঠিত ‘তামাক কোম্পানির কূট-কৌশল: গণমাধ্যমের করণীয়’ শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় এসব বিষয় তুলে ধরেন আলোচকরা।
বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
সম্প্রতি আইন সংশোধনকে বাধাগ্রস্ত করতে তামাক কোম্পানিগুলো অর্থ এবং আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরারর চিঠি দিয়েছে জানিয়ে কর্মশালায় দাবি করা হয়, আইন সংশোধন হলে সরকারের রাজস্ব হারানোসহ বেশকিছু ভিত্তিহীন তথ্য তুলে ধরেছে দুটি বিদেশি বহুজাতিক তামাক কোম্পানি।
আইন সংশোধনের সাথে খুচরা বিক্রেতাদের কর্মসংস্থান হারানোর তেমন সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে এতে বলা হয়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায় জরিপ প্রতিবেদন ২০২১ অনুযায়ী, দেশে সবধরনের খুচরা ব্যবসায়ে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৫ লাখ ৩৯ হাজার।
তবে খাদ্য, পানীয় এবং তামাকপণ্য বিক্রি করে এরকম খুচরা দোকানের সংখ্যা মাত্র ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪১, যারা অন্যান্য পণ্যের সাথেই তামাকপণ্য বিক্রি করে।
২০২১ সালে আইন শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আইন প্রণয়নে তামাক কোম্পানি ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো গোষ্ঠির পরামর্শ বা মতামত গ্রহণ এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫.৩ এর সুস্পষ্ট লংঘন বলেও তুলে ধরা হয় কর্মশালায়। কারণ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দেশ হিসেবে ২০০৩ সালে এফসিটিসিতে স্বাক্ষর করেছে বলে জানানো হয়।
কর্মশালায় দাবি করা হয়, প্রতিবছর জাতীয় বাজেটকে প্রভাবিত করতে সিগারেট কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনকে ব্যবহার করে থাকে।
আলোচকদের ভাষ্য, মালিকদের অর্থায়নে বিড়ি শ্রমিকরা মানববন্ধন কর্মসূচির মাধ্যমে বিড়ির মূল্য না বাড়ানোর আন্দোলন করে।
এছাড়া কোম্পানিগুলো সুবিধাভোগীদের দিয়ে কলাম ও নিবন্ধ প্রকাশ, ডিও লেটার দেওয়া ইত্যাদি কূটকৌশল অবলম্বন করে বলেও বিভিন্ন নথিপত্র তুলে ধরা হয়।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা একই সময়ে তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের (২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা) চেয়ে অনেক বেশি বলে এতে দাবি করা হয়।
দুটি কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিসিআইসির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর সাজ্জাদুর রহমান, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি দৌলত আকতার মালা, আত্মা’র কনভেনর লিটন হায়দার, কো-কনভেনর নাদিরা কিরণ ও মিজান চৌধুরী এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের, মো. হাসান শাহরিয়ার।
গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা) আয়োজিত দুইটি কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত মোট ৫১ জন সাংবাদিক অংশ নেন।
পুরোনো খবর
'তামাকের কারণে বছরে ক্ষতি ৮ হাজার কোটি টাকা'
পরিবেশ বিপর্যয়ে তামাক এর নেতিবাচক প্রভাব