১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি সলঙ্গার রহমতগঞ্জে এই গণহত্যা ঘটে; দিনটিকে সিরাজগঞ্জবাসী সলঙ্গা দিবস হিসেবে পালন করে।
Published : 02 Jun 2024, 04:29 PM
একশ বছর আগে ব্রিটিশ শাসনাধীনে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় সংঘটিত গণহত্যার দিনটিকে কেন জাতীয় দিবসের স্বীকৃতি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।
সেইসঙ্গে সলঙ্গা গণহত্যা সংঘটনের স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছে আদালত।
এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেয়।
১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি সলঙ্গার রহমতগঞ্জে ওই গণহত্যা ঘটে, যে দিনটিকে সিরাজগঞ্জবাসী সলঙ্গা দিবস হিসেবে পালন করে।
সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবী জনস্বার্থে এ রিট আবেদন করেন। তারা হলেন– মো. আসাদ উদ্দিন, মো. কাওসার আলী, মো. বদরুদ্দোজা বাবু, মো. গোলাম হাসনায়েন, মো. হারুনর রশিদ, মো. গোলাম কিবরিয়া, রোকসানা সুলতানা, জহিরুল হক কিসলু, মো. আব্দুল বাতেন শেখ, মো. হেকাম আলী শিমুল ও মো. মোরশেদুল ইসলাম।
রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উদ্দিন।
পরে মো. আসাদ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেছে। গণহত্যার দিনটিকে কেন জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। এ ছাড়া গণহত্যার স্থানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আসাদ উদ্দিন বলেন, ১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি ছিল সলঙ্গা হাটের দিন। সেদিন মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশের নেতৃত্বে সলঙ্গা হাটে চলতে থাকে ব্রিটিশ পণ্য বর্জনের প্রচারাভিযান। ওইদিন আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন জনতা উত্তাল হয়ে উঠলে পুলিশ গুলি চালায়।
সেদিন ৩৯ জন ব্রিটিশ পুলিশের রাইফেলের গুলিতে সরকারি হিসাবে সাড়ে চার হাজার হতাহত হন; বেসরকারি হিসাবে যার সংখ্যা অন্তত ১০ হাজার।
অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন বলেন, সেদিন সলঙ্গার মাটি নিহত ও আহত মানুষ এবং গৃহপালিত পশুর রক্তে ভেসে যায়। লাশ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় সিরাজগঞ্জের রহমতগঞ্জে। সেখানে তৈরি হয় বাংলাদেশের প্রথম গণকবর। আজও সে গণকবর সলঙ্গার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। সিরাজগঞ্জের মানুষ দিনটিকে সলঙ্গা দিবস হিসেবে পালন করে।
সরকারি-সেবরকারি বিভিন্ন নথি ও প্রকাশনায় এ হত্যাকাণ্ডের স্বীকৃতি রয়েছে জানিয়ে আসাদ উদ্দিন বলেন, ইতিহাসে দিনটিকে ‘সলঙ্গা দিবস’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। কিন্তু দিবসটি কেবল স্থানীয়ভাবেই পালন করা হয়। জাতীয় দিবস হিসাবে এটিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এমনকি ঘটনাস্থলে একটি স্মৃতিস্তম্ভ পর্যন্ত স্থাপন করা হয়নি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক এবং রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিবাদী করা হয়েছে এই রিট আবেদনে।