আন্দোলনরত শিক্ষকদের একজন হেমায়েত হোসেন বলেন, “পুলিশ আমাদের পিটিয়েছে। আমাদের সঙ্গে থাকা সম্মানিত নারী শিক্ষকদের হেনস্তা করেছে, আমাদের টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে দিয়েছে।”
Published : 12 Mar 2025, 06:31 PM
পদযাত্রা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে যাওয়ার সময় বাধার মুখে কদম ফোয়ারা মোড়ে অবস্থান নেওয়া প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
শিক্ষকরা ফের জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেওয়ায় পল্টন থেকে হাই কোর্ট এবং মৎস্য ভবন থেকে শিক্ষা ভবনমুখী রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষায়িত সব বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্ত সুনিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে ১৭ দিন ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের’ ব্যানারে অবস্থান করছেন শিক্ষকরা।
বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বাধার মুখে শিক্ষকরা রাস্তা দখল করে কাফনের কাপড় মুড়ে শুয়ে পড়েন।
ফলে বন্ধ হয়ে যায় পল্টন থেকে হাই কোর্ট ও মৎস্য ভবন থেকে শিক্ষা ভবনমুখী রাস্তায় যান চলাচল। দুটি সড়কে গাড়ির তীব্র জট তৈরি হওয়ায় মানুষজন পড়েন ভোগান্তিতে।
পরে পুলিশ দুপুর ২টার দিকে শিক্ষকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এসময় বেশ কয়েকজন শিক্ষককে আটক করা হলেও পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশের রমনা জোনের ডিসি মাসুদ আলম বলেন, “তাদের মাথার ভেতরে একটাই ধারণা যে, রাস্তা আটকালে বা রাস্তা বন্ধ করলেই তাদের দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়া হবে। এখান থেকে কেউ বের হতে পারছিল না। আমরা তাদের বলেছি তাদের মেসেজটা আসল জায়গায় পৌঁছাইতে হবে, কিন্তু না বুইঝা রাস্তা দখল। সেখান থেকে আস্তে আস্তে আমরা তাদের সরিয়েছি।
“তাদের কিছু নেতা ভালো ছিল, আবার অনেকে ছিলেন উস্কানি দিয়েছে। উস্কানি দেওয়া কয়েকজনকে আমরা আটক রেখেছিলাম। এখন ছেড়ে দিয়েছি, এখন আর কেউ আটক নাই।”
আন্দোলনরত শিক্ষকদের একজন হেমায়েত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুলিশ আমাদের পিটিয়েছে। আমাদের সঙ্গে থাকা সম্মানিত নারী শিক্ষকদের হেনস্তা করেছে, আমাদের টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে দিয়েছে। আমরা সড়ক ছেড়ে আবারও প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়েছি।
“১৭ দিন ধরে আমরা সড়কে। কেউ কি দেখার নেই? দীর্ঘদিন বেতন না পেয়ে আমাদের শিক্ষকরা আজ আর পারছেন না।”
আন্দোলনরত শিক্ষকরা অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষায়িত সব বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্ত করা, এ স্কুলগুলোর প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো সুনিশ্চিত করা, অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের নূন্যতম তিন হাজার টাকা শিক্ষাভাতা নিশ্চিত করা, শিক্ষার্থীদের মিড-ডে মিলসহ শিক্ষা উপকরণ, খেলাধুলা সরঞ্জাম দেওয়া ও থেরাপি সেন্টার বাস্তবায়ন করা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ভোকেশনাল শিক্ষা কারিকুলামের আওতায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পুনর্বাসন সুনিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছেন।