জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের প্রয়াণে

আনিসুর রহমান
Published : 1 Dec 2021, 06:25 PM
Updated : 1 Dec 2021, 06:25 PM


গল্পের মতো করে বলি। দেশের পরাধীন জামানায় তিনি জন্মেছিলেন ঢাকার বাইরে, অন্য এক জেলায়, ১৯৩০-এর দশকে। বাবার চাকরি সূত্রে ঘুরেছেন দেশের নানা প্রান্ত। স্থিত হয়েছেন রাজধানী শহরে। যে সময়ে রবীন্দ্রনাথ তার জীবনের অনেকটা শেষ প্রান্তে। রবীন্দ্রনাথ ততদিনে কীর্তি ও কর্মে জগৎবিখ্যাত, বাংলার এক প্রান্তে কাজী নজরুল ইসলামের আবির্ভাব বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির নববসন্ত রূপে, এই প্রান্তে দামাল কিশোর শেখ মুজিবুর রহমানের উত্থান। এমন সময়ে তার ছেলেবেলা এই বাংলায়, এই শহরে।

বড় হয়ে সেই শিশু যোগসূত্র খুঁজে পেলেন রবীন্দ্রনাথ, নজরুল আর শেখ মুজিবের কথা, সৃষ্টিকর্ম আর আদর্শের সঙ্গে, প্রত্যক্ষে এবং পরোক্ষে। সেই ছেলে দিন দিন বড় হলেন, সুশিক্ষার ধাপগুলো পেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন বাংলা বিভাগে। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে অংশ নিলেন। সেই উত্তাল সময়ের ইতিহাসের দুর্লভ প্রামাণ্য ধরে রাখলেন তার ক্যামেরায়। তিনি চলেছেন নিজের ধ্যানে ও খেয়ালে, ইতিহাসের মোক্ষম সময়গুলোতে। যার সবটাই হয়েছে এক একটা স্বতন্ত্র ইতিহাস। তিনি বাঙালির, বাংলাদেশের আধুনিক ইতিহাসের পরিব্রাজক যেমন, একই সঙ্গে তিনি নিজেও নতুন এক ইতিহাস। তাঁকে নিয়ে উপন্যাস বা ছায়াছবি নির্মিত হলে সেই ইতিহাসের মোড়গুলো বুঝতে আমাদের জন্যে দারুণ এক ঘটনা হবে।

বাঙালির ভাষা আন্দোলনের আগের ও পরের ইতিহাসের অবশ্যম্ভাবী মানুষটি শেখ মুজিবুর রহমান। ধারণা করি কিশোর তরুণবেলা থেকেই তিনি শেখ মুজিবের রাজনীতির প্রতি মনোযোগী হয়ে উঠেছিলেন। পরবর্তী সময়ে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের ধারাবাহিকতা থেকে আমরা তা বুঝতে পারি।

১৯৫৬ সাল। বাংলায় স্নাতকোত্তর করলেন। পড়াশোনায় ঈর্ষণীয় ভালো করলেন। একই বিভাগে যোগ দিলেন শিক্ষক হিসেবে। তখনও জাতি হিসেবে আমরা পরাধীন। সময়টা বড় বেশি কঠিন। শেখ মুজিবুর রহমান বেশিরভাগ সময় জেল জুলুমের খড়গে থাকেন। রবীন্দ্রনাথ সাধের পাকিস্তানে নিষিদ্ধ।

এমন সময় তার সামনে সৌভাগ্যের সব বৃহস্পতি অবারিত। তিনি মার্কিন মুল্লুকে ফুলব্রাইট বৃত্তি পেলেন, ভাষাতত্ত্বে উচ্চতর পড়াশোনা করার জন্যে। একই সঙ্গে বিবিসির চাকরির প্রস্তাব। সঙ্গত, বিবিসির চাকরি বেশি আকর্ষণীয়। তিনি তার শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল হাইয়ের উপদেশ মেনে বিবিসিতে যোগ না দিয়ে, পারি জমালেন মার্কিন মুল্লুকে। উদ্দেশ্য ফিরে এসে শিক্ষকতায় যোগ দিবেন, গবেষণা করবেন নজরুলের উপর, করলেনও তাই। তিনি নজলের উপর প্রথম ডক্টরেট। প্রথম নজরুল অধ্যাপক। নজরুলকে আন্তর্জাতিক মানবতাবাদী ও সাম্যবাদের মানদণ্ডে পরিচিত করলেন। বাকিটা অনন্য এক ইতিহাস। বাংলাদেশ ভূখণ্ডের গত সত্তর বছরের বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার ইতিহাস লেখা হলে, তিনি হবেন সেই ইতিহাসের বড় এক অধ্যায়।

তিনি ছিলেন মনেপ্রাণে ধ্যানেজ্ঞানে নিদ্রায় জাগরণে চলনে বলনে নিরহংকারী গবেষক ও শিক্ষক। বাংলাদেশের মানুষের আচরণ বিষয়ক কোনো বিদ্যার প্রবর্তন করা হলে, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকের প্রতিমূর্তি কেমন হতে পারে তা তুলে ধরার জন্যে তার জীবন ও কর্ম , আদর্শ ও ধর্ম, নীতি ও নৈতিকতা একটা নমুনা হতে পারে। তিনি কেবল তার সময়ের নক্ষত্র ছিলেন না, তিনি নক্ষত্র ভবিষ্যতের জন্যেও। আমরা যদি জাতি হিসেবে সেই নক্ষত্র ঠিক ঠিক দেখতে পারি।

১৯৫০ এর দশক, ষাটের দশক পেরিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এসে গেছে। এর মধ্যে আমাদের জাতীয় জীবনে ঘটে গেছে অনেক ঘটনার ঘনঘটা। স্বাধীনতার আন্দোলনের স্থপতি বঙ্গবন্ধু গোটা দেশকে বুকে ধারণ করে জেল জেলখানায় ঢোকেন আর বের হন। রবীন্দ্রনাথকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যার গল্প বলছি তিনি সবঘটনার ভেতরে বা বাইরে, দৃশ্যে এবং অদৃশ্যে যুক্ত আছেন মনপ্রাণ দিয়ে। রবীন্দ্রনাথকে নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সোচ্চার থেকেছেন। যার মাসুল তাঁকে দিতে হয়েছে ১৯৭১ সালে দখলদার পাকিস্তানী সেনাদের হাতে ঢাকার সেনানিবাসে বন্দী হয়ে। একপর্যায়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার বন্ধু আর সহকর্মীদের তৎপরতায় সিনেটর জন এফ কেনেডির তড়িৎ পদক্ষেপে প্রাণে বেঁচে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরিত হন।

তার সম্পর্কে এই ঘটনাগুলো অনেকের জানা । আমি ১৯৯০ এর দশকে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে ঢুকি, তখন এই ঘটনাগুলো খুব কমই জানি। কলাভবনের দোতলায় বাংলা আর ইংরেজি বিভাগ পাশাপাশি। আমি ইংরেজির ছাত্র। প্রতিদিন বাংলাবিভাগের দিক দিয়ে ইংরেজি বিভাগের দিকে যাই এবং আসি। ভবনটির পশ্চিম-দক্ষিণ কোণার সিঁড়ি দিয়ে উঠে বা দিকে মোর নিয়ে করিডোর ধরে কয়েক রুম পরেই ইংরেজি বিভাগের শুরু। আর এই কয়েক রুমের একটিতে বসতেন তিনি। মানুষটির মুখায়ব দেখে আমার ছোট দাদা কুদরত আলী শেখ এর মুখচ্ছবি মনে হতো। দাদা ততদিনে বেঁচে নাই। এই অদৃশ্য কারণে কলা ভবনের দোতলার কক্ষে বসা মানুষটিকে দেখার জন্যে ভেতরে অন্য এক টান কাজ করতো। কক্ষের সামনে লেখা রফিকুল ইসলাম। এরপর জেনে গেলাম ইনিই বাংলার শিক্ষক নজরুল অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।
আমি অনেকটা দূর বা কাছ থেকে ওনার প্রতি একটা মনোযোগী দৃষ্টি রাখতাম। উনি হাঁটেন, চলেন, তার মাঝে যেন একটা সুর ও সংগীত কাজ করতো, কখনো মনে হতো ভেতরে ভেতরে গুনগুন করতেন। অই সময়ে, আমার ওই বয়সে এরকমটাই মনে হতো। নব্বই দশকের শেষভাগে রাষ্ট্রক্ষমতায় আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী। শেখ রেহানার সম্পাদনায় সাপ্তাহিক বিচিত্র প্রকাশিত হতে শুরু করেছে। সাংবাদিক বেবী মওদুদ নির্বাহী সম্পাদক। বিচিত্রার অফিস ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরে। বেবী অপার আগ্রহে ছাত্র থাকা অবস্থাতেই বিচিত্রায় কাজ শুরু করি।
এখানে একটা ঘটনা একটু বিশদ বলি। বিচিত্রা প্রকাশের আগে তার প্রস্তুতি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শেখ রেহানার সম্পাদনায় ১৯৯৮ সালে পনেরোই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে 'শ্রদ্ধাঞ্জলি' নামে একটা সংকলন প্রকাশিত হয়েছিল। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে বেবী অপা ছাড়াও যুক্ত ছিলাম আমি আর কবি আসলাম সানী। আমাদের তিনজনের বড় কাজ ছিল বিভিন্ন জনের কাছ থেকে লেখা সংগ্রহ করা। সেই সুবাদে বেবী আপার সূত্রে বাংলা বিভাগের দুই প্রবীণ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এবং আনিসুজ্জামানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার সুযোগ ঘটে।
বিচিত্রা প্রকাশিত হতে শুরু হলো। বেবী অপা যেভাবে বলতেন, সেভাবেই বলি। আমার কাজ ছিল জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ। আমার লেখালেখি এবং অনুবাদের কাজ ছাড়াও ব্যাংকের লেনদেনসহ অন্যকিছু কাজে আমাকে সহযোগিতা করতে হতো। কিছুকিছু ক্ষেত্রে বিশ্বস্ততা আবশ্যক হয়ে পড়লে প্রশাসন বিভাগের প্রধান রাশিদা বেগম আসমা এবং আমার উপর অনেক বেশি আস্থাশীল ছিলেন বেবী আপা। যেকারণে আমাদের উপর অতিরিক্ত কিছু দায়িত্ব পড়েছিল, যেমন বিশেষ কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা, অফিস-এর কেনাকাটা এসব কাজ। প্রতি সপ্তাহে বিচিত্রা প্রকাশ পেলে কয়েকজন মানুষকে উনি নিজ হাতে পত্রিকা দিয়ে আসতেন, মাঝে মাঝে আমাকেও যেতে হতো। এর মধ্যে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এবং অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

ততদিনে আমি জেনে গিয়েছি এই দুই প্রবীণ শিক্ষাবিদ প্রধানমন্ত্রী এবং বেবী অপার সরাসরি শিক্ষক। কোনো কারণে তিনি সময় করে উঠতে না পারলে, বা ঢাকার বাইরে বিশেষ করে কলকাতায় থাকলে আমি গণভবনে পত্রিকা পৌঁছে দিতাম আর রফিকুল ইসলাম স্যার আর আনিসুজ্জামান স্যারের পত্রিকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে যখন যেতাম সঙ্গে নিয়ে যেতাম। এক পর্যায়ে এটা একটা নিয়ম হয়ে গিয়েছিলো রফিকুল ইসলাম স্যারের কপিটি আমি প্রতি সপ্তাহে ওনাকে পৌঁছে দেব। এভাবেই চলছিল। একদিন আপা বললেন, এই সপ্তাহে তোমাকে কষ্ট করে রফিকুল ইসলাম স্যারের ওখানে যেতে হবে না, ওনার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল, ওনাকে পত্রিকা দিয়ে এসেছি। এর মধ্যে কলাভবনে ওনার রুমের সামনে দিয়ে আসার সময় ওনার সঙ্গে দেখা। সালাম দিতেই উনি বললেন, এই সপ্তাহে তুমি যে আমাকে বিচিত্রার কপি দিলে না? আমি বললাম, বেবী অপার সঙ্গে আপনার দেখা হয়েছিল। তখন উনি হাসতে হাসতে বললেন, বেবীর কপি বেবী দিয়ে গেছে, তুমি তোমারটা দিবে। পরে বুঝতে পেরেছি পত্রিকা বড় কথা না, আমরা সময় ও সুযোগ মতো দুজনেই ওনার সঙ্গে দেখা করি, এটা ওনার ভালো লাগে। দেখা হলে পত্রিকাসহ নানা বিষয়ে আগ্রহ নিয়ে জানতে চাইতেন। পত্রিকার কি অবস্থা এইসব।

এরপর সপ্তাহে একবার ওনার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া, অনেকটা নিয়ম হয়ে গিয়েছিলো। উনি কথা বলতেন খুব মার্জিত স্বর আর নিজস্ব একটা স্বতঃস্ফূর্ত সুর মিলিয়ে। ওনার কথা বলার ভঙ্গি ওই বয়স থেকে আজ পর্যন্ত মোহনীয় মনে হতো আমার কাছে। ওই সময় একটা দৃশ্য আমি কল্পনা করার চেষ্টা করতাম। ওনার এক সরাসরি ছাত্রী তার প্রিয় শিক্ষককে নিজ হাতে পত্রিকা পৌঁছে দিতে ভালোবাসেন। প্রধানমন্ত্রীরও উনি প্রিয় শিক্ষক। এই শিক্ষক আর তার ছাত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগটা কেমন হতে পারে। এটা আমি মনে মনে কল্পনা করার চেষ্টা করতাম। পত্রিকা মারফত অনেক সময় জানতে পারতাম কোনো কোনো উপলক্ষে ওনাদের দেখা হতো। শেষতক ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একুশে গ্রন্থমেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তৃতামালা শেষে বইমেলা উদ্বোধন করে, প্রধানমন্ত্রী মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে কয়েকটি স্টল দেখবেন। প্রধানমন্ত্রী নেমেছেন, কিছুদূর গিয়ে থেমেছেন, তার রাষ্ট্রাচারের ব্যতিক্রম করে দর্শক সারিতে বসা তার প্রিয় শিক্ষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম-এর জন্যে অপেক্ষা করছেন। তার রাষ্ট্রাচার কর্মকর্তারা দৌড়ে এসে স্যারকে এসে নিয়ে গেছেন। ঘটনাটা দর্শক সারির আরো পেছনের দিকে বসা আমি প্রায় দুই যুগ আগে আমার ভেতরের কল্পনার সঙ্গে মিলিয়ে নিচ্ছি। অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এমন একজন শিক্ষক ছিলেন যার জন্যে দেশের রাষ্ট্রাচার থেমে যেতে পারে। সেই প্রজন্মের শেষ মানুষদের একজন ছিলেন তিনি।

তার মাঝে পোশাকি এবং ডিগ্রির দেমাগী ভাব ছিল না। আমরা খেয়াল করে দেখবো অনেকে নামের আগে অধ্যাপক ড. এই শব্দগুলো জুড়ে দিয়ে নিজেদের একধাপ উপরের মানুষ হিসেবে জাহির করতে বড়ই মরিয়া। রফিকুল ইসলাম স্যার ছিলেন ব্যতিক্রম। ওনার কাছে রফিকুল ইসলাম-ই যথেষ্ট। যিনি পরে সম্মানিত হয়েছিলেন নানা পদক ও পুরস্কারে। শেষতক হয়েছিলেন জাতীয় অধ্যাপক। আসলে উনি ছিলেন জাতির অধ্যাপক। যিনি পেয়েছিলেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জমশতবর্ষ উদযাপনের জন্যে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম মাঝে কোনো ক্ষমতার কেন্দ্রের সূত্র কাজে লাগিয়ে অযাচিত কোনো সুবিধা নেবার মতো দৃশ্যত এবং অদৃশ্যত কোনো অগ্রাধিকার পাবার অভিপ্রায় তার কথা ও কাজে কখনো দেখা যায়নি। শেষ পর্যন্ত তার অগ্রাধিকারের জায়গাটা ছিল শিক্ষা আর গবেষণা।

তার সম্পর্কে জানা একটি গল্প বলে লেখাটি শেষ করছি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ শুরু প্রাক্কালে, জাতির বড় উত্তাল সময়ে, জরুরি এক বার্তা নিয়ে ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরে গিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে। বড়মেয়ে শেখ হাসিনার শিক্ষককে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা ভেতরে ঢেকে নিয়ে ঘরোয়া আপ্যায়নে সম্মানিত করেছেন। বাড়ি ভর্তি মানুষ, সারি সারি খাট/বিছানা চকি পাতা, স্যার জানতে চেয়েছেন এতো খাটে কারা ঘুমায়। বঙ্গমাতা উত্তর দিচ্ছেন, এই যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ আসে রাত বিরেতে। এতো রাতে গিয়ে এই অচেনা শহরে কোথায় গিয়ে ঘুমাবে। আর এই অবস্থার মাঝে হাসুকে পড়াশোনা করতে হয়, বুঝতেই পারছেন। সেই ছাত্রী আজ প্রধানমন্ত্রী, তার প্রিয় শিক্ষক চলে গেলেন। এরকম ক্ষমতার কেন্দ্রের মানুষটিকে, দেশের পরের প্রজম্নের মানুষদের উপরে স্নেহের ছায়া দেয়া শেষ মানুষদের একজন ছিলেন অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।