ভ্রূপল্লবের ছন্দ আমাকে লিখতে বলে।
Published : 09 Jul 2024, 03:29 PM
অনুবাদ ও ভূমিকা: আলম খোরশেদ
আলফোনসো রেইয়েস
মাত্র
মাটির গভীর থেকে উঠে আসে
শূন্যতার স্রোতধারা।
আকস্মিক ও অগোচর, একটি সেডার বৃক্ষ
উগরে দেয় সুগন্ধী দীর্ঘশ্বাস।
আমরা তো গোপনীয়তার
মিহি ও মৃদু অবসান।
আমাদের আত্মা ঘুমিয়ে পড়া মাত্র
স্বপ্নেরা উথলে ওঠে।
এইসব ঝাপসা যুক্তির খেলা
কী করুণ, যখন স্তব্ধতার মাঝে
তোমার স্মৃতির ভেতর থেকে
সূর্যালোক এসে পড়ে আমার শরীরে!
কার্লোস পেয়্যিসের
সময়পাঠ
এক.
ঘড়িরা বিকল
পথঘাট এলোমেলো
সময়ের সংগীতজুড়ে।
... বেজে কুড়ি মিনিট।
তোমার
ধীর
গতির কারণে
আমি অনেক দেরিতে আমার গন্তব্যে পৌঁছাই
আর এভাবেই নৈঃশব্দ্যের স্বচ্ছ ও সুবিশাল
যন্ত্রের ক্রীতদাস বনে যাই আমি।
দুই.
দেরিতে চলা ট্রেনের
দশ কিলোমিটার সামনের পথ।
দূরে প্রসারিত গ্রামদেশ,
টেলিগ্রাম দ্বারা চিহ্নিত কেবল।
খবরের পোশাকবদলের
সময় হবে এখন।
যৌবন আরও দশ মিনিট বেশি স্থায়ী হবে,
কারো চোখে তিনবার হাসি চমকাবে।
হারার বিনিময়ে জিতে নেওয়া
সময়ের মূল্যে কেনা
এক কিলো বিস্তৃত ভূদৃশ্য।
তিন.
সময় গড়িয়ে যায়;
একের মধ্য থেকে আসে দশ।
এসবই ক্রান্তীয় অঞ্চল,
বিশাল ও বিষণ্ণ,
কেউ জানে না এখন সময় কত।
ওক্তাবিও পাস
অপর প্রান্তে
আমি দিনের পৃষ্ঠা ওল্টাই,
লিখি, যা তোমার
ভ্রূপল্লবের ছন্দ আমাকে লিখতে বলে।
অন্ধকারের সত্যরূপ
আমি তোমার গভীরে প্রবেশ করি।
আমি অন্ধকারের প্রমাণ চাই,
পান করতে চাই কৃষ্ণ মদ:
আমার চোখজোড়া তুমি পিষে ফেলো।
তোমার স্তনাগ্রচূড়ায়
রাত্রির ফোঁটা:
রক্তমাংসের রহস্য।
আমার চোখ বন্ধ করে
আমি তোমার চোখের গভীরে গিয়ে খুলি।
তার রক্তিম শয্যায়
সদাজাগ্রত:
তোমার সিক্ত জিহ্বা।
তোমার রক্তনালির উদ্যানজুড়ে
ঝরনার সমাহার।
রক্তের মুখোশ পরে
আমি নিশ্চিন্তে তোমার ভাবনারাজ্য পাড়ি দিই:
বিস্মৃতি আমাকে হাত ধরে নিয়ে যায়
তোমার জীবনের অপর প্রান্তে।
গাব্রিয়েল সাইদ
অনুসরণের গান
আমি বাতাস নই, নই পাল,
বরং সেই হাল যে কেবল দেখে।
আমি পানি নই, নই হাল,
বরং সেই গায়ক যে গান গায়।
আমি স্বর নই, নই কণ্ঠ,
বরং সেই গান, যা গীত হয়।
আমি জানি না আমি কে, কী কথা বলি
তবু আমি তোমাকেই অনুসরণ করি।
হোসে এমিলিও পাচেকো
কবির গান
কবিতার একটাই বাস্তবতা: দুঃখভোগ।
বোদল্যার তার প্রমাণ। ওভিদও এমন
ঘোষণার প্রতি সমর্থন দেবেন।
এটাই অন্য অর্থে একটি বিপজ্জনক শিল্পের
বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা দেয়,
যার পাঠক খুবই কম
এবং যাকে দৃশ্যত ঘৃণা করেন অনেকেই
চেতনার বিকলন এবং আমাদের এই কালের চেয়ে
অনেক প্রাচীন এক সময়ের অবশেষ ভেবে,
যখন খোদ বিজ্ঞান জাদুবিদ্যার ওপর তার
একচেটিয়া অধিকার দাবি করে।