প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মোহাম্মদ বিন সালমানকে ‘দায়মুক্তি’ দিয়েছেন জানিয়ে মামলাটি খারিজ করে দেন এক মার্কিন বিচারক।
Published : 07 Dec 2022, 03:31 PM
যুক্তরাষ্ট্রের এক ফেডারেল বিচারক সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে খুন হওয়া সাংবাদিক জামাল খাশুগজির বাগদত্তার করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি যুবরাজকে দায়মুক্তি দিয়েছেন জানিয়ে মঙ্গলবার জন বেটস নামের ওই বিচারক হেতিস চেঙ্গিসের করা মামলাটি খারিজ করে দেন।
মামলা খারিজের ব্যাপারে তিনি অনিচ্ছুক ছিলেন এমন ইঙ্গিত দিয়ে বেটস বলেছেন, বাইডেন প্রশাসনের সিদ্ধান্তের কারণে তার করার কিছু ছিল না।
“মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) নতুন পদে নিয়োগ এবং খাশুগজি হত্যাকাণ্ডে তার সংশ্লিষ্টতা বিষয়ক বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ উভয় পরিস্থিতিতে আদালতের অস্বস্তি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র (প্রশাসন) আদালতকে জানায়, তিনি (এমবিএস) দায়মুক্ত,” ২৫ পৃষ্ঠার আদেশে বেটস এমনটাই লিখেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বিচারক মূলত তার আদেশের পেছনে যুবরাজ মোহাম্মদের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার প্রসঙ্গটিই টেনেছেন।
সেপ্টেম্বরে সৌদি বাদশা সালমান এক রাজকীয় ডিক্রিতে যুবরাজ সালমানকে সৌদি আরবের প্রধানমন্ত্রী করার ঘোষণা দেন।
২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে সৌদি গোয়েন্দারা খাশুগজিকে হত্যা করে ও তার লাশ গুম করে ফেলে। বেশ কয়েকবছর ধরে সৌদি আরবের ‘প্রকৃত’ শাসকের ভূমিকায় থাকা, এমবিএস নামে পরিচিত মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশেই এ হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে বলে ধারণা মার্কিন গোয়েন্দাদের।
যুবরাজ মোহাম্মদ অবশ্য শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন; পরে দাবি করেছেন, হত্যাকারীরা ‘তার ছত্রছায়ায় থেকে’ এ কাণ্ড ঘটিয়েছে।
নভেম্বরে আদালতে জমা দেওয়া নথিতে মার্কিন বিচার বিভাগের অ্যাটর্নিরা বিদেশি সরকারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় সৌদি যুবরাজ বিদেশি রাষ্ট্রের সরকার প্রধান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে বিচার থেকে ‘দায়মুক্তি’ পাবেন বলে জানিয়েছিলেন।
খাশুগজির বাগদত্তা হেতিস সেসময় এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছিলেন, “জামালের আরেকবার মৃত্যু হল।”
জ্বালানি ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করতে জুলাইয়ে সৌদি আরবে গিয়ে যুবরাজ মুহাম্মদের সঙ্গে ‘ফিস্ট বাম্প’ করে বাইডেনও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।
সেসময় বাইডেন যুবরাজ মোহাম্মদকে তিনি খাশুগজি হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী, তা বলেছিলেন বলে পরে জানায় হোয়াইট হাউস।
খাশুগজি ওয়াশিংটন পোস্টে লেখা তার কলামে সৌদি যুবরাজের বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করতেন। বাগদত্তা তুরস্কের নাগরিক চেঙ্গিসকে বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহে ২০১৮ সালের অক্টোবরে তিনি ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে গিয়েছিলেন। এরপর থেকেই তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
আরও খবর:
খাশুগজি হত্যাকাণ্ডে সৌদি যুবরাজকে দায়মুক্তি দিল যুক্তরাষ্ট্র
খাশুগজি হত্যা মামলায় সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের ‘দায়মুক্তি আছে’
খাশুগজি হত্যাকাণ্ড নিয়ে সৌদি যুবরাজের মুখোমুখি বাইডেন
খাশুগজি হত্যা: তুরস্কে বিচার স্থগিত, মামলা সৌদিতে পাঠানোর নির্দেশ