জালিয়াতি করে বেহাত হওয়া মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিলের (ওয়ানএমডিবি) সম্পদ জব্দ করে পাওয়া প্রায় ২০ কোটি মার্কিন ডলার মালয়েশিয়াকে ফেরত দিতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
Published : 07 May 2019, 11:16 PM
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ওয়ানএমডিবির চুরি যাওয়া তহবিল দিয়ে কেনা প্রায় ১৭০ কোটি ডলারের সম্পদ জব্দ করতে ২০১৬ সালে মামলা করে। এখন জব্দ হওয়া সম্পদেরই প্রথম কিস্তি হিসাবে এই অর্থ মালয়েশিয়াকে ফেরত দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
মালয়েশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদুত কমলা শিরিন লাহখধীর মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “বিচার বিভাগীয় তদন্তের আওতায় সম্পদের প্রথম কিস্তি মালয়েশিয়াকে হস্তান্তর শুরু করে আমরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট। মালয়েশিয়ার জনগণের সুবিধার্থে যুক্তরাষ্ট্র জালিয়াতির অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং প্রথম কিস্তির অর্থ ফেরতের উদ্যোগ সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষারই প্রমাণ তুলে ধরেছে।”
বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে মালয়েশিয়া সরকারের কাছে পাঁচ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার হস্তান্তর করেছে। ওয়ানএমডিবি থেকে অর্থ হাতিয়ে তৈরি করা হলিউডের একটি চলচ্চিত্রের আয় থেকে এ অর্থ জব্দ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র দেশটির চলচ্চিত্র নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ‘রেড গ্রানাইট পিকচার্স’ এর সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে এ অর্থ উদ্ধার করেছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল টমি থমাস। হলিউডের পর্দা কঁপানো ‘দ্য উল্ফ অব ওয়াল স্ট্রিট’ সিনেমাটি ওয়ানএমডিবি তহবিলের বেহাত হওয়া অর্থ দিয়ে বানানো হয়।
এছাড়া, ওয়ানএমডিবি তহবিল নয়-ছয় করে কেনা ম্যানহাটানের একটি সম্পদ বিক্রি করে আরো প্রায় ১৩ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার পাওয়া গেছে। ওই অর্থও মালয়েশিয়াকে ফেরত দেওয়া হবে।
মালয়েশিয়ার অর্থনীতির উন্নয়নের গতি জোরদার করতে ২০০৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ওয়ানএমডিবি তহবিল গঠন করেন। ওই তহবিলের প্রায় সাড়ে চারশ কোটি মার্কিন ডলার প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া হয় বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্র; যা নিয়ে দেশটি তদন্ত করছে।
তহবিলের অর্থ জালিয়াতির ঘটনায় সবচেয়ে বড় অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজাক নিজে। তার বিরুদ্ধে ৬৪ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ নিজের পকেটে পোরার অভিযোগ রয়েছে। যদিও রাজাক শুরু থেকেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন। কিন্তু তার সম্পদ এবং তার স্ত্রীর বিলাসী জীবন যাপন বিপরীত কথাই বলছে।
ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারির ঝড়ে নির্বাচনে ভরাডুবি হয়া রাজাক এক কারাগারে। তার বিরুদ্ধে ৪০টির বেশি অভিযোগে বিচার চলছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও মালয়েশিয়ার তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, বিশালবহুল বাড়ি ও ফ্ল্যাট, ব্যক্তি মালিকানাধীন উড়োজাহাজ ও সুপার ইয়ট এবং দামি শিল্পকর্ম ক্রয়ে জালিয়াতির ওই অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।