সুন্দা প্রণালীতে প্রাণঘাতী সুনামি সৃষ্টির কারণ ইন্দোনেশিয়ার আনাক ক্রাকাতাউ আগ্নেয়গিরির একটি অংশের নাটকীয়ভাবে ধসে পড়া, এটি ক্রমেই পরিষ্কার হচ্ছে।
Published : 29 Dec 2018, 10:34 PM
বিজ্ঞানীরা আনাক ক্রাকাতাউয়ের স্যাটেলাইট ইমেজ পরীক্ষা করে কী পরিমাণ পাথর ও ছাই সাগরের ছিটকে পড়েছিল তা হিসাবে করে দেখছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
তারা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহজুড়ে এর উচ্চতা ও আয়তনের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি হারিয়েছে আগ্নেয়গিরিটি। এর মধ্যে একটি আলোড়নেই হারিয়ে যাওয়া অধিকাংশ বস্তু সাগরে গিয়ে পড়তে পারে।
আর এটি নিশ্চিতভাবেই সাগরের পানি স্থানচ্যুত হয়ে পাঁচ মিটার উঁচু ঢেউ সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা করতে পারে, যে ঢেউ সুনামি হয়ে নিকটবর্তী জাভা ও সুমাত্রার উপকূল প্লাবিত করেছিল।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, গত শনিবারের ওই সুনামিতে ৪০০ জনের নিশ্চিত মৃত্যু হয়েছে এবং আরও ২০ জনেরও মতো এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় ৪০ হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
দিন বা রাত অথবা মেঘের মধ্য দিয়েও ভূপৃষ্ঠের দিকে নজর রাখতে পারে রাডার। এই সক্ষমতার ফলে আনাক ক্রাকাতাউয়ের হারানো উচ্চতার কিছু প্রাথমিক পরিমাপ নেওয়া সম্ভব হয়েছিল, বিশেষকরে এর পশ্চিম পাশটিতে।
আগ্নেয়গিরিটির ওই অংশটি যেখানে ৩৪০ মিটার উঁচু ছিল এখন সেটির উচ্চতা মাত্র ১১০ মিটারে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে পিভিএমবিজি। আয়তনের দিক থেকে ওই অংশটি ১৫ থেকে ১৭ কোটি ঘনমিটার বস্তু হারিয়েছে আর মাত্র চার থেকে সাত কোটি ঘনমিটার বস্তু এখনও রয়ে গেছে।
তবে ২২ ডিসেম্বর সুনামির দিনটিতে আগ্নেয়গিরিটি ঠিক কতোটুকু বস্তু হারিয়েছে আর পরবর্তীতে কতোটুকু হারিয়েছে তা অজানাই থেকে গেছে। বিজ্ঞানীরা কখনো আগ্নেয়গিরিটি পরিদর্শনের সুযোগ পেলে ও নিবিড় জরিপ চালাতে সক্ষম হলে আরও বিশদ ধারণা করতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু উদগীরণ এখনও অব্যাহত আছে আর এর চারপাশে নিরাপত্তাজনিত প্রবেশ নিষেধ এলাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, ফলে কেউই আনাক ক্রাকাতাউয়ের কাছে যাচ্ছেন না।
ওই পরীক্ষায় এর ফলাফল হিসেবে উঁচু ঢেউ তৈরি হওয়া ও এতে উপকূলভাগ ডুবে যেতে পারে এমন সম্ভাবনাও অনুমান করা হয়েছিল; বাস্তবে যা ঘটেছে তার সঙ্গে ওই পরীক্ষা ফলের উল্লেখযোগ্য মিল রয়েছে।