সবচেয়ে কম সময়ে রুবিক'স কিউব সমাধান করে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েছে 'সাব১ রিলোডেড' নামের রোবট, এমনটাই জানিয়েছেন রোবটের প্রস্তুকারক দল।
Published : 10 Nov 2016, 05:16 PM
মাত্র ০.৬৩৭ সেকেন্ড সময়ে ২১ বার ঘুরিয়ে কিউব সমাধান করে রোবটটি, তথ্য বিবিস-এর।
আগের ০.৮৮৭ সেকেন্ডের রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ডটি গড়ে এই রোবট। পূর্বের রেকর্ডটিও একই রোবটের পূর্ববর্তী আরেকটি সংস্করণের ছিল বলে জানানো হয়। তবে, সেটিতে ভিন্ন একটি প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছিল।
জার্মান সেমিকন্ডাকটর প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ‘ইনফেনিয়ন টেকনোলোজিস এজি’ তাদের স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চালনা প্রযুক্তি সংক্রান্ত অগ্রগতি তুলে ধরার জন্য এর চিপটি সরবারহ করেছে। যদিও একজন বিশেষজ্ঞ এই ধরনের কর্মকাণ্ডের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
মিউনিখের ইলেকট্রনিকা বাণিজ্য মেলায় রেকর্ড গড়ার ঘটনাটি আয়োজন করে ইনফেনিয়ন। একটি বাটন চাপার সঙ্গে সঙ্গেই রোবটের ক্যামেরা সেন্সরের উপরের আচ্ছাদন সরে যায়, যা সেটিকে কিউবটির অসম্পূর্ণতা শনাক্ত করতে অনুমতি প্রদান করে। এরপর এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি সমাধান খুঁজে বের করে এবং ছয়টি মোটর-নিয়ন্ত্রিত বাহুতে নির্দেশনা প্রেরণ করে। এই ছয়টি বাহু কিউবটির ছয়টি পৃষ্ঠকে ধরে রাখে এবং সেগুলো ঘুরিয়ে ধাঁধার সমাধান করে।
এই সমস্ত কিছুই ছিল একটি সেকেন্ডের ভগ্নাংশের অর্জন এবং সর্বমোট ঘূর্ণয়নের সংখ্যা শুধু সফটওয়্যার দ্বারাই গণনা করা সম্ভব। রেকর্ডটিতে ন্যূনতম সময় বজায় রাখার জন্য একটি বিশেষ ধরনের ‘স্পিড কিউব’ ব্যবহার করা হয়েছে যেটির অংশগুলির মধ্যে আসল কিউবগুলির থেকে তুলনামূলক কম ঘর্ষণ হয়। রুবিক ধাঁধা প্রতিযোগিতা পরিচালনা কমিটি-ওয়ার্ল্ড কিউব অ্যাসোসিয়েশন এই বিশেষ কিউবের ব্যবহার অনুমোদন দিয়েছে বলে জানিয়েছে ইনফেনিয়ন।
“আমরা এটিকে রূপক হিসেবে ব্যবহার করে দেখাতে চেয়েছি কিভাবে ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্মাণ করা হয়। আমরা এটা দেখাতে চাই যে ‘মাইক্রোইলেকট্রনিক্স’ ব্যবহার করে অনেক বেশি দক্ষতার সঙ্গে সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।”-বলেন জার্মান প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র গ্রেগর রডহিউসার।
“যখন এটি স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চালনার বিষয় যেখানে আপনার কোন কিছু করার ক্ষমতা খুবই সীমিত এবং সম্পূর্ণরূপে দ্রুতগতির প্রযুক্তির উপর নির্ভর করতে হয় সেক্ষেত্রেও এটি একইভাবে কাজ করবে।”-যোগ করেন তিনি।
অন্যদিকে, মেশিনের বিপরীতে মানুষের রুবিক’স কিউবের রেকর্ডটি ২০১৫ সালে ১৪ বছরের এক কিশোরের করা যেটি ছিল ৪.৯০৪ সেকেন্ডে।
এই রেকর্ডটির মাধ্যমে ইনফেনিয়ন তার ‘অরিক্স মাইক্রোকন্ট্রোলার’ এর গতির প্রতি সবার মনোযোগ আকর্ষণ করতে চায় যেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্বচালিত গাড়িকে প্রতিবন্ধকতা পর্যবেক্ষণ ও ব্রেক করতে সাহায্য করে। কিন্তু একজন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞ পরীক্ষাটি ব্যবহার সীমিত ছিল বলে মন্তব্য করেন।
ইউনিভার্সিটি অফ শেফিল্ড এর অধ্যাপক নোয়েল শারকে বলেন, “রুবিক’স কিউব এর সমাধান পদ্ধতিটি গাণিতিক যা আদর্শগতভাবে কম্পিউটার প্রোগ্রামের উপযুক্ত এবং সাব১-এর গতি সত্যি সত্যি চিত্তাকর্ষক ছিল।”
তবে স্ব-চালিত গাড়ি চালনা রুবিক’স কিউব থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটের যেখানে উন্মুক্ত পরিবেশে অসংখ্য অভাবনীয় পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রিনিচ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড হিসেবে গণ্য করার জন্য এই সময়কে অবশ্যই গ্রিনিচ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অর্গানাইজেশন দ্বারা নিবন্ধিত করাতে হবে। যদিও অনুষ্ঠানে সংগঠনটির কেউ উপস্থিত ছিলনা বলে জানা গেছে।
গ্রিনিচ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অর্গানাইজেশনের একজন মুখপাত্র বলেন, ইনফেনিয়ন যদি মনে করে তারা বর্তমান রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড গড়েছে তাহলে আমরা তাদের উৎসাহিত করবো আমাদের ওয়েবসাইটে একটি আবেদন করার জন্য এবং উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ আমাদের রেকর্ড ব্যবস্থাপনা দলকে পর্যালোচনার জন্য জমা দিতে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র খুব শীঘ্রই জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রডহিউসার।