চার বছর আগে এই আঙিনায় হয়েছিল ভরাডুবি। এবারও প্রথমে গোল হজম করে বসল তারা। সেখান থেকে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়াল পিএসজি। কিলিয়ান এমবাপের অসাধারণ হ্যাটট্রিকে বার্সেলোনাকে তাদেরই মাঠে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠার পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল প্যারিসের দলটি।
Published : 17 Feb 2021, 02:53 AM
বার্সাকে কঠিন বাস্তবতা বুঝিয়েছে পিএসজি: কুমান
কাম্প নউয়ে জিতবে পিএসজি, জানতেন এমবাপে!
কাম্প নউয়ে মঙ্গলবার রাতে শেষ ষোলোর প্রথম লেগে ৪-১ গোলে জিতেছে পিএসজি। লিওনেল মেসির গোলে এগিয়ে গেলেও প্রতিপক্ষের আক্রমণের তোপে ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি বার্সেলোনা। চোটাক্রান্ত নেইমার ও আনহেল দি মারিয়াকে ছাড়া খেলতে নামা পিএসজির আরেক গোলদাতা মোইজে কিন।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে এমবাপের পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনা ছিল ঢের-সব হতাশা যেন এক ম্যাচেই ঝেড়ে ফেললেন তিনি। গতিতে প্রতিপক্ষের রক্ষণ কাঁপিয়ে উপহার দিলেন স্মরণীয় এক পারফরম্যান্স।
২০১৬-১৭ আসরে শেষ ষোলোর প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ৪-০ গোলে জিতেছিল পিএসজি। কিন্তু ফিরতি পর্বে কাম্প নউয়ে এসে বিধ্বস্ত হয়েছিল ৬-১ ব্যবধানে। এবারের লড়াইও দুই লেগের হওয়ায় প্রতিশোধের পুরোটা অবশ্য এখনও বাকি; তবে দুর্দান্ত এই জয়ে পুরনো ক্ষতে নিশ্চয় কিছুটা প্রলেপ পড়ল পিএসজির।
পিএসজির এই দুই প্রচেষ্টার মাঝে ভালো সুযোগ পায় বার্সেলোনা। তবে কাছ থেকে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি অঁতোয়ান গ্রিজমান। বল নিয়ন্ত্রণে নিতেও বেগ পেতে হয়নি গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে।
২৭তম মিনিটে মেসির সফল স্পট কিকে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। পাল্টা আক্রমণে ডি-বক্সে ফ্রেংকি ডি ইয়ং পেছন থেকে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
আসরে মেসির এটি চতুর্থ গোল। চারটিই পেনাল্টি থেকে। মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের গোল হলো ২০টি।
প্রথমার্ধের বাকি সময়ে দুই দলই একটি করে ভালো সুযোগ পায়। লেইভিন কুরজাওয়ার শট টের স্টেগেন কর্নারের বিনিময়ে ঠেকানোর দুই মিনিট পর পাল্টা আক্রমণে গ্রিজমানের কোনাকুনি শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম পাঁচ মিনিটে দারুণ দুটি সুযোগ পায় মাওরিসিও পচেত্তিনোর দল। গতিতে বারবার বার্সেলোনার রক্ষণে ভীতি ছড়ানো এমবাপের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার পর কিনের শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান টের স্টেগেন।
চাপ ধরে রেখে ৬৫তম মিনিটে এগিয়ে যায় পিএসজি। ডান দিকের বাইলাইনের কাছ থেকে আলেস্সান্দ্রো ফ্লোরেন্সির ক্রস ঠেকাতে পারেননি টের স্টেগেন, পেছনে ছুটে আসা পিকে চেষ্টা করেন, কিন্তু তার পায়ে লেগে বল চলে যায় এমবাপের কাছে। জোরালো শটে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি।
আর ৮৫তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন এমবাপে। ইউলিয়ান ড্রাক্সলারের পাস পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ান বিশ্বকাপজয়ী ফরোয়ার্ড।
পিএসজির জার্সিতে নকআউট পর্বে আগের নয় ম্যাচে মাত্র এক গোল করেছিলেন এমবাপে। ১০ ম্যাচে হয়ে গেল চারটি।
এত বড় ব্যবধানে হারের পর ফিরতি পর্বে প্রতিপক্ষের মাঠে ঘুরে দাঁড়ানো ভীষণ কঠিন। অসম্ভব প্রায়। তবে দুরূহ কাজকে কীভাবে সম্ভব করা যায়, তা বার্সেলোনা ভালো করেই জানে। সেই চ্যালেঞ্জে আগামী ১০ মার্চ পিএসজি মাঠে নামবে রোনাল্ড কুমানের দল।