‘বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের’ ঘটনায় সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে বলে যে প্রতিবেদন যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে, তার সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
Published : 15 Apr 2016, 10:50 PM
শুক্রবার এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি ওয়াশিংটনের পাল্টা সমালোচনায় বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তুলনা করলে, আমাদের পুলিশ কম হত্যা করেছে এবং আমরা অপহরণ বা নির্যাতনকে কোনভাবেই অনুমোদন করি না।”
২০১৫ সালে বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের ওই বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়, “আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে হত্যা ও আইন লঙ্ঘনের ঘটনার তদন্ত বা দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করার উদ্যোগ বাংলাদেশ সরকার খুব কমই নিয়েছে।”
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে কতো মানুষের মৃত্যু হয়, তার কোনো পরিসংখ্যান সরকার প্রকাশ করে না বলে লেখা হয়েছে প্রতিবেদনে।
জয় বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদনকে যারা গুরুত্ব দিচ্ছেন, তাদের জন্যই ফেইসবুকে ওই পোস্ট।
“এটা তাদের জন্য, যারা মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা কর্তৃক আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমালোচনাকে অনেক বড় কিছু মনে করছেন। এই হলো বাস্তবতা যে, ২০১৫ সালে মার্কিন পুলিশ তাদের দেশে ৯৮৬ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে। এই তথ্যটি প্রকাশিত হয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায়।”
অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিরও সমালোচনা করেন সেদেশে তথ্য-প্রযুক্তি পেশায় কাজ করে আসা জয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, বাল্য বিবাহ, নারীর প্রতি সহিংসতা, কারখানার বাজে কর্মপরিবেশ এবং শ্রমিক অধিকারের লঙ্ঘনের কথাও তুলে ধরা হয়। অপহরণ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গুমের অভিযোগও সেখানে এসেছে।
এর পাল্টায় প্রধানমন্ত্রীর ছেলে যুক্তরাষ্ট্রের ‘গোপন কারাগারগুলোয়’ সন্দেহভাজন অপরাধীদের ওপর ‘অত্যাচার নির্যাতনের’ প্রসঙ্গ টানেন।
“যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের একমাত্র দেশ, যারা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্যাতন অনুমোদন করেছে এবং অপহরণ ও নিপীড়নের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন গোপন কারাগারগুলোতে মানুষদের আটক রেখেছে- যাকে তারা বলে, ‘অসাধারণ পথদর্শন’।
“এদের অধিকাংশ হলো সন্দেহভাজন জঙ্গি, কিন্তু এদের মাঝে অনেকেই রয়েছেন যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিরপরাধ নাগরিক, যাদের বছরখানেকের মাঝে বা তারও বেশি সময় পর ছাড়া হয়। এই সময়ের মাঝে তাদের পরিবার জানতে পারেন না যে তাদের অপহরণ করা হয়েছে।”
এই ‘অসাধারণ পথদর্শন’ কার্যক্রমের ‘সাহায্যকারী’ হিসেবে যুক্তরাজ্যসহ বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশকেও দায়ী করেন জয়।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে অপহরণ-নির্যাতন ও গোপন কারাগারে আটক রাখার এসব ঘটনা সম্প্রতি দেশটির সিনেটে তদন্ত শেষে অবৈধ ঘোষণা করা হলেও তাতে কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি বলে সমালোচনা করেন জয়।