রাজনৈতিক রিপোর্ট দিবেন না: যুক্তরাষ্ট্রকে হাছান

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সাম্প্রতিক প্রতিবেদনকে ‘রাজনৈতিক প্রতিবেদন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2016, 01:28 PM
Updated : 15 April 2016, 01:28 PM

শুক্রবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশ, কিছু ভাড়াটিয়া সংগঠন, তাদের অনুরোধ করব- আয়নায় নিজেদের চেহারা আগে দেখুন। নিজেদের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলুন, তারপর অন্য দেশ নিয়ে রিপোর্ট দিন। কারণ বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ের মতো শুটিং করে শিক্ষার্থী হত্যা করা হয় না।

“ … আর রাজনীতির জন্য মানুষ পুড়িয়ে মারা মানবাধিকার লঙ্ঘন না? রিপোর্টে সেটি বলেন না কেন? দয়া করে, রাজনৈতিক রিপোর্ট দিবেন না। এই রিপোর্ট রাজনৈতিক।”

বাংলাদেশে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের’ ঘটনাকে ‘সবচেয়ে বড় মানবাধিকার সমস্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে ‘ব্যর্থ’ হয়েছে।

বুধবার ওয়াশিংটনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেন, বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পূরণে, নাগরিক সমাজের পাশে দাঁড়াতে ও সরকারগুলোকে এ বিষয়ে দায়বদ্ধতার কথা মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অংশ এই প্রতিবেদন।

মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের (একাংশ) আয়োজিত সভায় হাছান মাহমুদ বলেন, “চীন যখন অর্থনৈতিক নেতৃত্ব অর্জন করেছে, তখন তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হচ্ছে।

“তেমনি বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। গতকালও যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রতিবেদনে আমাদের দেশের মানবাধিকার নিয়ে সমালোচনা করেছে।”

যেসব দেশ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, তারাই বাংলাদেশকে ‘অবদমিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত’ আছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, “ভেবেছিলাম ইউপি নির্বাচনে লজ্জার দায়ভার নিয়ে বেগম জিয়া পদত্যাগ করবেন। কিন্তু ভরাডুবির পরও তিনি নির্বাচনে আছেন। কারণ তিনি বুঝেছেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন না করে তিনি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।”

‘জিয়াউর রহমানকে ধরে এনে’ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করানো হয় দাবি করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক বলেন, "৯১ এ ক্ষমতায় এসে বিএনপি সে রেকর্ডিং বাজার থেকে সরিয়ে ফেলেছিল।”

তিনি বলেন, “অনেকে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলেন, কিন্তু মুজিবনগর সরকারের কথা বলেন না। অনেকে জয় বাংলা বলতে লজ্জা পেতেন, কিন্তু এখন বলা শুরু করেছেন। তারা জয় বঙ্গবন্ধু বলেন না, সামনে তাও বলবেন।”

পহেলা বৈশাখ উদযাপনে সরকারের ‘কড়াকড়ির’ প্রসঙ্গ তুলে হাছান মাহমুদ বলেন, “যারা এসব নিয়ে সমালোচনা করেন, তারা আগে নিজের দায়-দায়িত্ব ভাবুন। কারণ সরকারকে নিরাপত্তা দিতে হয়।”

পহেলা বৈশাখ উদযাপনের বিরোধিতাকারীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “পহেলা বৈশাখের যারা সমালোচনা করেন তাদের চেতনার দৈন্যতা রয়েছে, তারা মৌলবাদী চেতনায় দূষিত।”