দুর্গাপূজার ছুটি কাটাতে ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে বাংলাদেশে আসছেন তারা।
Published : 28 Sep 2022, 09:20 PM
দুর্গোৎসব উপলক্ষে যশোরের বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে এবার বিপুল সংখ্যক ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে আসছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি আবুল কালাম আজাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবার বাংলাদেশে ভ্রমণেচ্ছুদের চাপ অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে অনেক বেশি। দুর্গাপূজার ছুটি কাটাতে ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে বাংলাদেশে আসছেন তারা।”
আজাদ জানান, মঙ্গলবার ভারত থেকে এসেছে ২২৪৮ জন, সোমবার ২১৫৯ জন, রোববার ২৩০৭ জন; অথচ একমাস আগেও এর সংখ্যা ছিল ৪০০ থেকে ৫০০।
ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস ওয়েলফেয়ার স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, করোনা মহামারিতে দুবছর সবাই ঘরবন্দি ছিল; তাই অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে এবার অনেক বেশি সংখ্যক ভারতীয় ছুটি কাটাতে বাংলাদেশে যাচ্ছেন।
ভারতের চব্বিশ পরগনার হাবড়ার দুই বোন বুলুরানী মন্ডল ও প্রণতি মন্ডলের সঙ্গে কথা হয় বেনাপোলের 'রাজা বাদশা মানি চেঞ্জার' অফিসে। তারা যাবেন বাগেরহাটের দিগংগাল।
বুলুরানী মন্ডল বলেন, “এপারে আসলাম বাংলাদেশি আত্মীয়-স্বজনদের সাথে পূজার উৎসব ভাগাভাগি করতে। একই সাথে বাংলাদেশের কয়েকটি দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার ইচ্ছাও রয়েছে।”
বুলুরানীর ছোট বোন প্রণতি রানী মন্ডল বলেন, “বাংলাদেশে কখনও আসিনি; এবারই প্রথম। আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে। পুজোর কটা দিন খুব মজা করব। বাংলাদেশের হিন্দু তীর্থস্থানগুলো দেখার ইচ্ছাও রয়েছে।”
ভারতের চব্বিশ পরগনার দেওঘর এলাকার সুবোধ কান্তি সরকার (৫৩) স্ত্রী অনিতা রানী সরকারকে (৪৭) সঙ্গে নিয়ে এসেছেন বাংলাদেশে; বেনাপোলে কথা হয় তাদের সঙ্গে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সুবোধ কান্তি সরকার বলেন, সাতচল্লিশে দেশ বিভক্তির আগে পূর্বপুরুষের ভিটা ছিল বাংলাদেশে। বহু বছর হলো আসা হয় না। এবার পূজায় আসলাম। বেড়ানোও হবে, পূজা দেখাও হবে।”
কলকাতার রানাঘাটের রুনা রায় বলেন, “পূজা করতে গোপালগঞ্জের বোয়ালতলী শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছি। পূজার সময় কখনও আসতে পারিনি। এবার টানা ১০ দিনের ছুটি পেয়েছি। তাই শ্বশুরবাড়ির আত্নীয়-স্বজনদের সাথে পূজাটা খুব ভালো কাটবে।”
কলকাতার ফ্রি স্ট্রিট রোডের সূর্বণা অধিকারী (৪০), কলকাতার শান্তিনগরের কাকলি দাস (৪৫), মধ্য প্রদেশের দুলাল মন্ডল (৪২), চব্বিশ পরগনার দেওঘরের অনিতা রানী সরকার (৪৭) বাংলাদেশের হিন্দু তীর্থ স্থানগুলো দেখতে এসেছেন।
ভারতের শিলিগুড়ি দার্জিলিং এর রবীন্দ্র বিশ্বাস স্ত্রী লতা বিশ্বাস ও ছেলে রনি বিশ্বাসকে নিয়ে এসেছেন; আর হিরন সরকারের সাথে আছেন স্ত্রী সুস্মিতা সরকার, ছেলে সঞ্জয় সরকার ও মেয়ে অর্চনা সরকার।
ভারতের চাগদার পারুল বিশ্বাস বলেন, “সরকারি চাকরি করি, তাই ঘুরে বেড়ানোর সময় পাই না, পরিবারের সদস্যদের সময় দিতে পারি না। এবার পূজার লম্বা ছুটি থাকায় গোপালগঞ্জ বেড়াতে যাচ্ছি। সেখানে কিছু আত্মীয় আছেন, তাদের সঙ্গে দেখা করব।”
বাগেরহাটের হাকিমপুরের শিকদার বাড়ির দুর্গাপূজার আয়োজন দেখার ইচ্ছা রয়েছে বলেও তিনি জানান।
মধ্য প্রদেশের দুলাল মন্ডল (৪২) বলেন, “কাজের চাপে এতদিন সময় করে উঠতে পারিনি। লম্বা ছুটি পাওয়ার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছি।”