দুই যুগের বেশি ধরে চলে আসা এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ হওয়ায় মালিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
Published : 01 Mar 2023, 05:52 PM
মেহেরপুরে সড়কের দুই পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
বুধবার থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন সওজের খুলনা বিভাগীয় উপ-সচিব ও আইন কর্মকর্তা অনিন্দ্যিতা রায়। মেহেরপুর-কুষ্টিয়া মহাসড়কের প্রায় ৩০ কিলোমিটার জুড়ে এ অভিযান চলবে ৪ মার্চ পর্যন্ত। প্রথম দিনেই সহস্রাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
দুই যুগের বেশি ধরে চলে আসা এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিকরা উচ্ছেদের ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন। মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়ক চার লেনে উন্নীত করতে এই উচ্ছেদ অভিযান বলে জানিয়েছে সড়ক বিভাগ।
জেলা শহর থেকে খলিষাকুণ্ডি পর্যন্ত সড়কের দুই পাশের সরকারি ফাঁকা জায়গায় প্রায় দুই সহস্রাধিক দোকান, মার্কেট এবং স্থাপনা রয়েছে। বিশেষ করে মেহেরপুর কলেজ মোড়, ওয়াপদা মোড়, গোপালপুর, মদনাডাঙ্গা, বাঁশবাড়িয়া, গাংনী, বামুন্দী বাজার এলাকায় রয়েছে বড় বড় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান।
ওয়াপদা মোড়ের ওষুধ ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ আলী জানান, বাবার মৃত্যুর পর থেকে তিনি ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। দুই যুগের বেশি ধরে ব্যবসা করায় তারা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেন। কখনও জেলা পরিষদ, কখনও পৌরসভা, আবার কখনও সওজকে টাকা দিয়ে তারা এই ব্যবসা করে আসছেন।
কলেজ মোড়ের মুদি ব্যবসায়ী তৌফিক হোসেন জানান, এই জায়গার মালিকানা নিয়ে পৌরসভা, জেলা পরিষদ এবং সওজের মধ্যে মামলা চলছিল। তাই তিন সংস্থার সঙ্গে অলিখিত চুক্তি করে সবার মত তিনিও ব্যবসা করছিলেন। এই ব্যবসায় তার সংসারের একমাত্র আয়ের পথ। এতদিনের পুরানো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আজ ভাঙা পড়ল। এখন পরিবারকে নিয়ে রাস্তায় নামা ছাড়া উপায় নেই।
সরজমিনে দেখা যায়, রাস্তার দুপাশে নির্মিত অবৈধ সব দোকানপাট এবং স্থাপনা একাধিক বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় দোকান মালিকদের তাদের মালামাল নিরাপদ স্থানে নিতে ছোটাছুঁটি করতে দেখা যায়।
মুহূর্তে জমজমাট মার্কেটগুলো ফাঁকা ময়দানে পরিণত হয়ে যায়। উচ্ছেদ অভিযানে পুলিশ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং ফায়ার সার্ভিসের বিপুল সংখ্যক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
অনিন্দ্যিতা রায় জানান, অভিযান শুরুর আগে সকল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দখলদারদের নোটিশ দেওয়াসহ স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন এবং মাইকে প্রচার চালানো হয়েছে।
মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল করিম জানান, এসব জমির মালিকানা নিয়ে মামলা থাকায় এতোদিন অবৈধ দখলদারকারদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি আদালতের রায়ে সড়কের পাশের জমির মালিকানা সওজ পাওয়ায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে।
এ ছাড়া ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের চার লেনের কাজের কথাও জানান সওজের এই কর্মকর্তা।