গরমে ময়মনসিংহে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
Published : 28 Mar 2022, 01:03 PM
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শতাধিক শিশু এবং নগরীর এসকে হাসপাতালে অর্ধশতাধিক বয়স্ক লোকজন ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা.জামশেদ আলম বলেন, বছরের এই সময়ে বেশি মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এই ভাইরাসটা বেশির ভাগ সময় পাঁচদিন স্থায়ী হয়। প্রথমে হাসপাতালে কোন রোগী আসলে পানিশূন্যতা আছে কি না, পরীক্ষা করা হয়। পরে চিকিৎসা চালু করা হয়। এক সময় ডায়রিয়া রোগে মানুষ মারা গেলেও এখন তেমনটি হয় না।
এদিকে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেলেও প্রস্তুতি রয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। এদিকে হাসপাতালে বেড না পেয়ে অনেক রোগীর ঠাঁই হয়েছে মেঝে ও বারান্দায়।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কথা হয় ঈশ্বরগঞ্জের তাসলিমা আক্তারের সঙ্গে। সাড়ে তিন মাসের ডায়রিয়া আক্রান্ত সন্তানকে নিয়ে তিনদিন ধরে তিনি হাসপাতালে বলে জানালেন।
তাসলিমা বলেন, “হঠাৎ করে পেট ব্যাথার সঙ্গে পাতলা পায়খানা শুরু হলে বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হই। তিনদিন চিকিৎসা শেষে বাচ্চাকে একটু সুস্থ মনে হচ্ছে। পায়খানাও একটু কমেছে।”
ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে নগরীর এসকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গফরগাঁও উপজেলার বাচ্চু মিয়া বলেন, “স্যালাইন চলছে। একটু স্বস্তির মধ্যে আছি।”
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা.নজরুল ইসলাম বলেন, গরমে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর, সর্দি এবং কাশির মতো রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এসব রোগীর মধ্যে বেশির ভাগিই শিশু। এখন হাসপাতালে শতাধিক শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রোগী বেশি হলেও আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আরও বেশি কিছু দিন এই ভাইরাসটি সংক্রমণ ছড়াবে। ”
এ সময়ে চলাফেরা ও খাওয়া দাওয়ায় সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়ে এ চিকিৎসক বলেন, “শিশুদের সবসময় মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে। বার বার সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। সচেতনতাই সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব।”
তিনি বলেন, “গরম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে রোগির চাপ বেড়েছে। যাদের অবস্থা খারাপ তাদেরকে ভর্তি করে অবজারভেশনে রাখা হচ্ছে। এখানে বেশির ভাগ বয়স্কদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। ডায়রিয়া মোকাবেলায় চলাফেরা ও খাওয়া দাওয়ায় মানুষকে সচেতন হতে হবে।”
জেলা সিভিল সার্জন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “জেলার সব উপজেলায় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী রয়েছে। সকলকেই আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। প্রতিদিনেই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। হয়তো আরো কিছু দিন এই ভাইরাসটি স্থায়ী হবে।”
আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রোগবালাই বৃদ্ধি পেয়ে থাকে; তবে সচেতন হলে এসব রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সহজ বলে মনে করেন তিনি।