নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে একসঙ্গে আধা ডজন শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্রে (এসি) বিস্ফোরণ কেন ঘটেছিল, তার তদন্তে তিনটি কমিটি কাজ করবে।
Published : 05 Sep 2020, 12:09 PM
একটি কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। একটি কমিটি করেছে তিতাস গ্যাস। অন্য কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমানকে আহ্বায়ক করে গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটিকে ১০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্মন, উপ-পরিচালক(অপারেশন্স) নুর হাসান ও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ্ আরেফিন।
তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে বলে কোম্পানির নারায়ণগঞ্জ অফিসের ডিজিএম মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন। কমিটির প্রধান করা হয়েছে তিতাস গ্যাসের ঢাকা অফিসের মহাব্যবস্থাপক আবদুল ওহাবকে।
শুক্রবার রাতে এশার নামাজের সময় ওই মসজিদে একসঙ্গে ছয়টি এসি বিস্ফোরিত হয়ে অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি অগ্নিদগ্ধ হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ জনের মৃত্যু হয়।
নারায়ণগঞ্জের ডিসি জসিম উদ্দিম শনিবার সকালে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে যান আহতদের দেখতে।
তিনি জানান, নিহতের লাশ দাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
এই ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খাদিজা তাহেরী ববিকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ওই তদন্ত কমিটিকে আগামী ৫ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে ডিসি জানান।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ফতুল্লা থানার পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঘটনার সময় মসজিদের ভেতরে অর্ধশতাধিক লোক নামাজ পড়ছিলেন।
“এর মধ্যে হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণ ঘটলে ভেতরে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। বিস্ফোরণের ধাক্কায় মসজিদের থাই গ্লাস উড়ে গিয়ে পড়ে। ভেতরে যারা ছিলেন, প্রায় সবাই কমবেশি দগ্ধ হন।”
রাত পৌনে ৯টার দিকে ওই মসজিদে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফায়ার বিগ্রেডের উপ পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দেড় টনের ৬টি এসি ছিল। সবগুলো একসাথে বিস্ফোরিত হয়েছে। এসিতে ব্যবহৃত ফ্রেয়ন গ্যাসের অস্থিত্ব আমরা মসজিদের ভেতরে বাতাসে পেয়েছি। এর পেছনে অন্য কোনো ঘটনা আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
ওই মসজিদের কাছাকাছি বাসা, এরকম বেশ কয়েকজন অভিযোগ করেছেন, ওই এলাকায় তিতাসের গ্যাসের পাইপে ‘লিকেজ’ ছিল বহু দিন ধরে। মসজিদের ভেতরে গ্যাস জমে কোনোভাবে কিছু ঘটেছে কি না, সেই সন্দেহের কথা বলেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আরেফিন বলেন, “ওই মসজিদের সামনে তিতাস গ্যাসের লাইনে লিকেজ আছে, এটা আমরাও দেখেছি। আসলে কী ঘটেছে, সেটা তদন্ত করে তারপর বলা যাবে।”