রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের শূন্যরেখার ভেতর স্থাপন করা চৌকি সরাতে পাঁচদিন সময় চেয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ।
Published : 03 Dec 2019, 08:38 PM
মঙ্গলবার সকালে এ বিষয়ে পতাকা বৈঠকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি প্রতিবাদ জানালে বিএসএফ পাঁচদিন সময় চায় বলে বিজিবি-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দীন মাহমুদ জানান।
গত শুক্রবার রাতে সাহেবনগর সীমান্তে এই চৌকি স্থাপন করেছে বিএসএফ।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দীন মাহমুদ বলেন, সাহেবনগর সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়েছে। সেখানে দুই দেশের বাহিনী এলাকাটির সীমানা চিহ্নিত করে। এতে দেখা গেছে বিএসএফ শূন্যরেখার ভেতরে এসে এই চৌকি স্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, শূন্যরেখাটি নদীর মাঝখান দিয়ে গেছে। সেখানে চর জেগে উঠেছে। বিএসএফ শূন্যরেখা থেকে প্রায় ৭০ মিটার ভেতরে এসে অস্থায়ী চৌকি স্থাপন করেছে। এ নিয়ে বিজিবির উদ্বেগের বিষয়টি তাদের জানানো হয়েছে। তারা বলছে এটা অস্থায়ী। যেহেতু নিয়মের মধ্যে পড়ে না, সেই জন্য তাদের এই চৌকি সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
“বিএসএফ পাঁচ দিন সময় চেয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সীমান্তের ১৫০ মিটার ভেতর কোনো বাহিনীরই স্থায়ী বা অস্থায়ী কোনো স্থাপনা থাকতে পারে না।”
বিজিবি জানায়, বিজিবির সাহেবনগর সীমান্ত ফাঁড়ির এক কিলোমিটার পূর্ব দিকে পদ্মা নদী থেকে বের হয়ে সরু একটি নদীর ধারা উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী হয়ে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার চর লবণগোলা এলাকায় ঢুকেছে। তবে নদীর ধারাটির ভাঙনে সেখানকার সীমানা পিলারগুলো গত বছরই নদীতে বিলীন হয়ে যায়। সম্প্রতি ওই নদীতে পানি কমে গিয়ে পশ্চিম প্রান্তে বাংলাদেশ সীমানার মধ্যে ছোট একটি চর পড়েছে। শূন্যরেখা সংলগ্ন চরটিতে গিয়ে কিছুদিন ধরে বিজিবির সদস্যরা টহল দিচ্ছিলেন। চরটি বাংলাদেশ ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত বলে নৌকা ছাড়া হেঁটেই বিজিবি সদস্যরা সেখানে যাতায়াত করতেন।
বিজিবি কর্মকর্তা জিয়াউদ্দীন আরও বলেন, গত শুক্রবার রাতে বিএসএফ সদস্যরা বাঁশের মাচা পেতে ওপরে খড় ও পাটকাঠি দিয়ে একটি অস্থায়ী চৌকি নির্মাণ করেন। পরদিন শনিবার সকাল থেকে ভারতের চর লবণগোলা ফাঁড়ির বিএসএফ সদস্যরা সেখানে অবস্থান নিয়ে টহল দেন। বিজিবি সদস্যরা রোববার দিনে একবার ও রাতে আরেকবার চরের কাছাকাছি গিয়ে চলে যাওয়ার সংকেত দিলে বিএসএফ সদস্যরা চৌকি ছেড়ে চলে যান। রাতে আবারও নৌকাযোগে গিয়ে বিএসএফ সদস্যরা চরে ওঠার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে বিজিবি চরে গিয়ে অবস্থান নেয়। ফলে বিএসএফ নৌকা ঘুরিয়ে ভারতের ভেতরে চলে যায়। তবে গভীর রাতে বিএসএফ আবারও চরের অস্থায়ী চৌকিতে গিয়ে অবস্থান নেয়। সোমবার সকালে বিজিবি সেখানে গেলে বিএসএফ ফের চলে যায়।