বেতন বৈষম্যের অভিযোগ তুলে বিভিন্ন স্থানে গত কয়েকদিনের আন্দোলনের মধ্যে সাভারেও বিক্ষোভ করেছে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
Published : 08 Jan 2019, 06:38 PM
মঙ্গলবার সাভারের আশুলিয়া ও হেমায়েতপুর এলাকার অন্তত ১০টি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভে অংশ নেয়।
এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত ৩০ জন শ্রমিক আহত হয়েছে।
শ্রমিক, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে সাভারের হেমায়েতপুর এলাকার স্টান্ডার্ড গ্রুপের সামস, টিসিএল-২ ও ডার্ড গার্মেন্টসের শ্রমিকরা বিক্ষোভে নামলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের লাঠিপেটা, টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। দক্ষিণদড়িয়াপুর এলাকার জেকে গার্মেন্টসের কিছু শ্রমিকও বিক্ষোভ করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক জানান, নতুন মজুরি কাঠামোতে বেতন বৈষম্যের বিষয়টি শ্রমিকরা বেশ কিছু দিন যাবত মালিকপক্ষকে জানিয়ে আসছে। তবে তাদের কথায় কর্তৃপক্ষের সাড়া না পাওয়ায় মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানার মূল ফটকের সামনে হেমায়েতপুর-ট্যানারি সড়কে অবরোধ দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশের পরিচালক সানা সামিনুর রহমান বলেন, শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে তাদেরকে ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকলে লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
এদিকে আশুলিয়ার শিমুলতলা এলাকার মদিনা অ্যাপারেলস, কাঠগড়া জিরাব এলাকার সাউদান মিলেনিয়াম, টেক্সটাউন গ্রুপ, হ্যকন কোরিয়া, সাউদান ডিজাইন, মেট্রোনিটিং, চারাবাগ এলাকার নিউ এশিয়া, লিলি ফ্যাশন কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে।
বিশৃঙ্খলা এড়াতে কর্তৃপক্ষ কারখানাগুলোতে একদিনের ছুটি ঘোষণা করেছে।
শিল্প পুলিশ-১ এর পরিদর্শক মাহববুর রহমান জানান, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যে কোনো ঝামেলা এড়াতে শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গামের্ন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, সব গ্রেডেই বেতন বেড়েছে; কিন্তু ৩ ও ৪ নম্বর গ্রেডের শ্রমিকরা না বুঝেই আন্দোলন করছে। তাদের বেতন ৬৮০৫ থেকে বেড়ে ৯৫৯০টাকা হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকরা মনে করছে অন্যদের বেড়েছে কিন্তু তাদের বাড়েনি।
রোববার ও সোমবার রাজধানী ঢাকা ও গাজীপুরেও শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে।