গাজীপুরের বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ বিচিমুক্ত পেয়ারার জাত উদ্ভাবন করেছে, যা দেশি পেয়ারার চেয়ে সুস্বাদু আর ‘ফলনও বেশি’।
Published : 24 Nov 2017, 09:35 AM
উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মদন গোপাল সাহা জানান, কয়েক বছর গবেষণা করে গত বছর তারা এ জাতটি উদ্ভাবন করতে সক্ষম হন। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘বারি পেয়ারা-৪’।
গত অর্থবছর কৃষি মন্ত্রণালয় এর অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনে বিভিন্ন জায়গায় চাষ করা হচ্ছে। পরে কলম করে কৃষক পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা হবে।
“আমাদের দেশে সারা বছরই কমবেশি পেয়ারা চাষ করা হয়। দেশের সব জায়গাতেই পেয়ারা হয়। দেশি পেয়ারা সাধারণত জুলাই-অগাস্ট মাসেই বেশি হয়। বিচিহীন বারি পেয়ারা-৪ সেপ্টেম্বর-নভেম্বরে বেশি হয়। তবে সারা বছরই এটা উৎপাদন করা যায়।”
বিচিহীন পেয়ারা এটাই এ দেশে প্রথম জানিয়ে তিনি বলেন, “এটি বিচিওয়ালা পেয়ারার চেয়ে বেশি সুস্বাদু। অমৌসুমি এ পেয়ারায় সবুজ পাতা হয় প্রচুর যা বেশি ফল উৎপাদনের নিশ্চয়তা দেয়। এর ফলন বারি পেয়ারা-২-এর চেয়ে বেশি। ভিটামিন সি-এর চাহিদা মেটানোর জন্য পেয়ারা একটি অনন্য ফল।
“প্রতিটি ফলের গড় ওজন ২৮৪ গ্রাম। এটি অত্যন্ত সুস্বাদু ও কচকচে। খোলা জায়গায় সংরক্ষণ করা যায় নয় দিন। সেপ্টেম্বরে যখন বাংলাদেশে অন্য ফল খুব কম থাকে তখন এটি দেশে ফলের চাহিদা মেটাবে। জাতটি পাহাড়ি অঞ্চলসহ সব জায়গায় সব আবহাওয়ায় চাষ করা যায়। তবে উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুতে জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দো-আঁশ মাটিতে ভাল হয়।”
কৃষকদের জন্য এ পেয়ারাটি বিশেষ আকর্ষণীয় হবে বলে মনে করেন মদন গোপাল।
তিনি বলেন, এটি রোগ ও পোকামাকড় সহিষ্ণু, উচ্চ ফলনশীল। যখন অন্য জাতের পেয়ারা পাওয়া যায় না তখন এটি বাজারে আসে। পাঁচ বছরের গাছে গড়ে ২৯৬টি ফল ধরে, যার ওজন ৮৪ কেজির বেশি। প্রতি হেক্টরে ৩২ টন ফল পাওয়া যায়।
এ পেয়ায়ায় রোগ-বালাই না হলেও ছাতরা পোকার আক্রমণ দেখা গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথম দিকে আক্রান্ত পাতা ও ডগা ছাঁটাই করে ধ্বংস করতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে ডাইমেথোয়েট গ্রুপের কীটনাশক অনুমোদিত মাত্রায় ব্যবহার করে সুফল পাওয়া যায়।