পাবনার সুজানগরে দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ এবং ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
Published : 20 Aug 2017, 05:04 PM
রোববার বিকালে পাবনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. ইমরান হোসেন চৌধূরীর আদালতে ওই দুই ছাত্রী বাদী হয়ে মামলা করেন।
বিচারক মামলা গ্রহণ করে আসামিদের গ্রেপ্তারের আদেশ দিয়েছেন বলে জানান বাদীর আইনজীবী রাজিউল্লাহ সরদার রঞ্জু।
আসামিরা হলেন উপজেলার চর ভবনীপুর মাস্টার পাড়ার হযরত আলী, আল আমিন, শাহিন, মিঠুন, পাংকু ও সোহেল রানা
এরা সবাই সুজানগর পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাবের অনুসারী বলে বাদীর পরিবারের দাবি।
আইনজীবী রাজিউল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সুজানগর থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ না করায় আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
মামলার বরাত দিয়ে তিনি জানান, সুজানগর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে গত ১ অগাস্ট স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে হযরত আলী, আল আমিন, শাহিন, মিঠুন, পাংকু ও সোহেল রানা অস্ত্রের মুখে তাদের পার্শ্ববর্তী নিকিরী পাড়ার বাঁশ বাগানে তুলে নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ এবং তার ভিডিও চিত্র মোবাইল ফোনে ধারণ করে।
ঘটনা কাউকে জানানো হলে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।
“ঘটনার কয়েক দিন পর ভিডিও চিত্র দেখিয়ে আবার তাদের সঙ্গে যাওয়ার প্রস্তাব দিলে মেয়ে দুইটি তা প্রত্যাখান করে। এরপর তারা ওই ভিডিও ফেইসবুকে আপলোড করলে বিষয়টি জানাজানি হয়।”
পরে ওই দুই ছাত্রীর অভিভাবকরা থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণ না করে তাদের ফিরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন এ আইনজীবী।
তিনি বলেন, পরে বিষয়টি নিয়ে পৌর মেয়রের কাছে ওই দুই ছাত্রীর পরিবার বিচার দাবি করলেও তিনি কৌশলে সালিশী বৈঠকের মাধম্যে সময়ক্ষেপণ করেন। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়েই তারা আদালতে মামলা করেন।
সুজানগর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহিনুজ্জামান শাহিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ধর্ষকরা পৌর মেয়রের ক্যাডার হওয়ার কারণে ওই দুই ছাত্রী আইনের আশ্রয় নিতে পারে নাই। আমরা কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি তাদের।”
সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র আব্দুল ওয়াহাব ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “মেয়ে দুটির অভিভাবকরা আমার কাছে এসেছিল। এটা নিয়ে কয়েক দফা সালিশ বৈঠকও হয়েছে, কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি।”
তার কর্মী সমর্থকের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি আর বলেন, “তারা আওয়ামী পরিবারের ছেলে হলেও আমার লোক নয়। এ ঘটনার সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে একটি মহল মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।”
মামলা না নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে সুজানগর থানার ওসি ওবায়দুল হক বলেন, “এ ধরনের কোনো অভিযোগ নিয়ে কেউ আমাদের কাছে আসে নাই। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”