পানি সামান্য কমলেও ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। টানা নয় দিন জলবন্দি মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে।
Published : 14 Jul 2017, 09:40 PM
প্রায় সাতশ বর্গকিলোমিটারের প্লাবিত এলাকায় শুকনো স্থান ও জ্বালানির অভাবে রান্না করার যাচ্ছে না। শত শত গ্রামে সাড়ে তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। পানি ওঠার কারণে জেলার ১৯৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে শুক্রবার প্রবাহিত হচ্ছিল। কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি ১৭ সেন্টিমিটার কমলেও এখনও বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
“বন্যায় ৪২টি ইউনিয়নের সাড়ে ৫শ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার আরও অন্তত আটটি গ্রাম প্লাবিত হয়। ১২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে।”
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার রাতে কালেক্টরেট সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান।
এসময় ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব আলী রেজা মজিদও উপস্থিত ছিলেন।
আলী রেজা মজিদ জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জাল হোসেন চৌধুরী মায়া ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল বন্যা পরিস্থিতি দেখতে আগামী রোববার কুড়িগ্রাম আসছেন। সে কারণে তিনি অগ্রবর্তী দল হিসেবে আগে এসেছেন। বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করছেন।
এ সময় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান বন্যার্তদের কল্যাণে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
রাজিবপুরে ভেঙে গেছে পাকা সড়ক
কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার বটতলা-উপজেলা সড়কের ২৫ ফুট জায়গা বন্যার প্রবল তোড়ে ভেঙে গেছে।
শুক্রবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে বন্যার পানির প্রবল তোড়ে ফকিরেরদও বড় পুকুরের কাছে পাকা সড়কটি ভেঙে যায়।
এতে উপজেলা শহর, মূল বাজার ও নৌঘাটের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
চারদিকে পানি থাকায় মাটি ও বালু পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে সড়ক মেরামত কাজে বিলম্ব হচ্ছে।
“আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে বালু সংগ্রহ করে বস্তা দিয়ে রাস্তা মেরামতের চেষ্টা করছি। লোকজন বাধ্য হয়ে বটতলা থেকে গাওছিয়া বাঁধ হয়ে টাঙ্গালিয়া বউবাজার দিয়ে যাতায়াত করছে।”