রোববার দুপুরে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস।
Published : 16 Apr 2023, 08:51 PM
কুষ্টিয়ায় টানা ১০ দিন ধরে তীব্র তাপদাহে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। প্রাণিকূলের নাভিশ্বাস উঠেছে।
টানা তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় হিট স্ট্রোক, ডায়রিয়া, শিশুদের নিউমোনিয়াসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার।
গত পাঁচদিনে তীব্র তাপদাহের শিকার হয়ে পাঁচ শতাধিক বয়স্ক ও শিশু কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল চিকিৎসা নিয়েছেন।
ডা. তাপস কুমার সরকার বলেন, “প্রতিদিনই গরমজনিত শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের শয্যা সংখ্যার তুলনায় প্রায় পাঁচগুণ বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে।
“রোববার দুপুর পর্যন্ত রোগীর সংখ্যা একশ ছাড়িয়েছে; যাদের অধিকাংশই ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত। সবশেষ তথ্যানুযায়ী হাসপাতালে ভর্তির প্রায় ৭০০ রোগীর মধ্যে ৭০ শতাংশই গরমজনিত রোগে আক্রান্ত।”
শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে সূর্যের উত্তাপ। প্রবহমান বাতাস আগুনের তাপের মতো অনুভূত হচ্ছে। দুপুরের পর ঘরের বাইরে বের হওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে।
এদিকে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের বিত্তিপাড়া এলাকায় বেশ কিছু মালবাহী পরিবহন থামিয়ে গাছের নিচে চালক ও হেলপারদের বসে থাকতে দেখা গেছে। তবে তীব্র তাপদাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
প্রতিদিনের মতো জীবিকার তাগিদে গলায় ঝুড়ি ঝুলিয়ে রাস্তায় বের হয়েছেন ফেরিওয়ালা মুনিরুল। তীব্র তাপদাহে থেমে গেছে তার চলার গতি। আশপাশে গাছের ছায়া না পেয়ে একটি ভবনের প্রাচীরের কোনায় বসে তাকে ঝিমাতে দেখা গেছে।
কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল আলীম বলেন, “তীব্র খরতাপের কারণে তামাক চাষ অধুষ্যিত ভেড়ামারা, দৌলতপুর ও মিরপুর উপজেলায় প্রতিদিন অন্তত ২০টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে।
“অনেক সময় অধিক তাপের কারণে শুষ্ক তামাকের গুদামে এমনিতেই আগুন ধরে যাচ্ছে। এতে বেশ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন চাষিরা।”
তাপ প্রবাহের কারণে গত সাতদিনে জেলার ৬টি উপজেলায় ছোট বড় শতাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা জানান।
এদিকে কুমারখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান বলেন, “গত ১০ দিন ধরে কুষ্টিয়াসহ আশপাশের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি থেকে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রিতে ওঠানামা করছে।
“রোববার দুপুর আড়াইটায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার ছিল ৪১ ডিগ্রি। আগামী দুই একদিনের মধ্যে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।”