টাটকা চাল দিয়ে বানানো বাহারি পিঠা ছাড়া শীতের শুরুটা বোধহয় বাঙালি নারীদের কাছে পরিপূর্ণতা পায় না। তাইতো প্রতি বছর শীতের শুরুতেই দেশে-বিদেশে যেখানেই বাঙালি থাকুক না কেন, শুরু হতে থাকে পিঠা উৎসব।
Published : 11 Dec 2018, 10:30 AM
মূলত শীত ঋতুর প্রথম ভাগে বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জে নারীদের বানানো শীতের পিঠার মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চারদিক। দেশ কিংবা বিদেশেও বাঙালিরা এ আয়োজন থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে চান না।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার দক্ষিণ কোরিয়ার গুয়াঞ্জুতে অবস্থিত বাঙালিরা আয়োজন করেছিল পিঠা উৎসবের।
হাজারো কাজের চাপ, কিংবা নানা রকম প্রতিকূলতার মাঝেও গুয়াঞ্জুতে অবস্থিত বাঙালিরা সব সময় দেশীয় ঐতিহ্য ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকেন, ওইসব উৎসবের দিনে মিলনমেলায় দেখা মেলে এক টুকরা বাংলাদেশ। যার ফলে গুয়াঞ্জু শহরে অবস্থিত সব কোরিয় ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের কাছে বাংলাদেশ কমিউনিটি খুব সুপরিচিত একটি নাম।
গুয়াঞ্জুর নারীরাও যেন পিছিয়ে নেই, তারা পরিচয় দিলেন তাদের রুচি এবং গুণের, ফুটিয়ে তুললেন তাদের নকশা, পরিবেশন করলেন ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা, নকশীপিঠা, ফুল জরি পিঠা, খাজ-চমচম, নারিকেল-পুলি, গোশতের পুলি, ডিমের ঝাল পিঠা, ছিটরুটি পিঠা, খোলাজা পিঠা, রসগজা পিঠা, দুধ চিতই ও তেলের পিঠাসহ আরও কিছু পিঠা।
এখানকার বাঙালিরা একটু বেশিই অতিথিপরায়ণ, যার কারণে সামাজিক বন্ধনটি অনেক মজবুত থাকে সব সময়। শুধু নিজের পরিবারের সঙ্গে না খেয়ে, সবাই মিলে একসঙ্গে খাবে, আনন্দ করবে, নিজেদের আনন্দস্মৃতি অন্য বাঙলি ভাই-বোনদের সঙ্গে ভাগ করবে, এই জন্যই তারা আয়োজন করে সব ঐতিহ্যবাহি উৎসব।
গল্পে গল্পে সবাই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন, অন্যদিকে সময় থেমে থাকে না, সবাইকে উঠতে হয় কিন্তু অন্তরে লেগে থাকে এক অতৃপ্ত স্বাদ। মন যেন পড়ে থাকে মায়ের হাতের বানানো সেই পিঠার থালায়।
লেখক: পিএইচডি শিক্ষার্থী, ফটোনিক ন্যানোম্যাটেরিয়ালস ল্যাবরেটরি, দক্ষিণ কোরিয়া
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |