সকালে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি।
Published : 15 Aug 2022, 02:44 PM
জাতীয় শোক দিবসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন।
সোমবার সকালে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনের কর্মসূচি।
প্রথমে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ফুল দেওয়া হয় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষ থেকে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়ে দলীয় সভাপতি হিসেবেও শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা মণ্ডলির সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবু-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, হাছান মাহমুদ, আ ফম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া এবং কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বেলা ১১টার পর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়ক সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য খুলে দেওয়া হয়। বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি হাজারো মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতির প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।
ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, মৎসজীবী লীগের নেতা-কর্মী ও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের পক্ষ থেকে এসময় ফুল দেওয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যাল, ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতিনিধিরাও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এছাড়া সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
ধানমণ্ডি থেকে প্রধানমন্ত্রী দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে যান রাজধানীর বনানী কবরস্থানে। সেখানে জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের কবরে শ্রদ্ধা জানান তিনি। পরে ফাতেহা পাঠ ও দোয়ায় অংশ নেন।
১৯৭৫ সালের এই দিনে সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে নিহত হন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
সেই রাতে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধু ছাড়াও তার স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল, শেখ জামালের স্ত্রী রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ নাসেরকে হত্যা করে।
নিহত হন বঙ্গবন্ধুর বোনের স্বামী আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবী ও শিশুপুত্র সুকান্ত বাবু; বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, নিকট আত্মীয় শহীদ সেরনিয়াবাত ও রিন্টু।
ধানমণ্ডির বাড়িতে পুলিশের বিশেষ শাখার সাব ইন্সপেক্টর সিদ্দিকুর রহমান ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিলকেও গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় সে সময় প্রাণে বেঁচে যান।
বঙ্গবন্ধুকে তার জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় দাফন করা হলেও পরিবারের অন্য সদস্যদের ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।