অন্তর্ধানের পর ব্যাকুল হাসিনা আহমেদ দুই মাসের বেশি সময় পর পেয়েছেন স্বামী সালাহ উদ্দিনের দেখা।
Published : 19 May 2015, 01:24 AM
সোমবার সন্ধ্যায় আবেগঘন এই সাক্ষাতে বিএনপির এই নেতা সন্তানদের দেখতে ঢাকায় আসতে চেয়েছেন।
মেঘালয়ের শিলংয়ে সরকারি একটি হাসপাতালে বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন সালাহ উদ্দিন। ভারতে মামলা হওয়ায় তার দেশে ফেরায় জটিলতা রয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়ে আসছেন।
দুই মাস পর গত ১১ মে সন্ধান পাওয়ার পরদিন থেকে শিলংয়ের ওই হাসপাতালে রয়েছেন বিএনপির এই যুগ্মমহাসচিব। সেখানেই তার সঙ্গে দেখা করেন হাসিনা।
বিএনপি জোটের হরতাল-অবরোধের মধ্যে ‘নিখোঁজ’ স্বামীর সন্ধান জানার পর ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন হাসিনা। ভিসা পাওয়ার পর রোববার রাতে বিমানে কলকাতার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন তিনি।
কলকাতা থেকে সোমবার সকালে রওনা হয়ে শিলং পৌঁছে সন্ধ্যায় হাসপাতালে যান সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী। সেখানে স্বামীর সঙ্গে ১৫ মিনিট কথা বলার সুযোগ পান তিনি।
সাক্ষাতের সময় উপস্থিত বিএনপি নেতা আব্দুল লতিফ জনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, একসাথে হওয়ার পর স্বামী-স্ত্রী দুজনে দুজনকে জড়িয়ে ধরেন। এসময় দুজনই কাঁদছিলেন।
স্ত্রীর কাছে সালাহ উদ্দিন জানতে চান সন্তানদের খবর। তিনি বলছিলেন, সন্তানদের দেখতে তিনি ঢাকায় ফিরতে চান।
হাসিনার সঙ্গে জনি ছাড়াও ছিলেন তার ভগ্নিপতি মাহবুব কবির ও আরেকজন আত্মীয়।
বিএনপি নেতা জনি আগে থেকে শিলং রয়েছেন। দলীয় নেতাকে দেখে এসে তিনি রোববার বলেছিলেন, সালাহ উদ্দিনের স্মৃতিভ্রম হচ্ছে।
সোমবার সকালে সালাহ উদ্দিনের সিটি স্ক্যান হয়েছে।
সালাহ উদ্দিনের এখনই ছাড়া পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন ইস্ট খাসি হিল জেলার পুলিশ সুপার এম খাড়খাড়ং।
অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এখন তার ছাড়া পাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমরা আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি।”
হাসপাতাল থেকে যদি পুলিশ সালাহ উদ্দিনকে আদালতে হাজির করে, তাহলে বাংলাদেশের এই নেতাকে ভারতের কারাগারে যেতে হবে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তার সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছর কারাদণ্ড।
বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধের মধ্যে লুকিয়ে থেকে বিবৃতি পাঠিয়ে আসা সালাহ উদ্দিনকে গত ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরার একটি বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়।
এজন্য হাসিনা আহমেদ ও বিএনপি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দায়ী করলেও সরকারের পক্ষ থেকে বরাবরই তা অস্বীকার করা হয়।
৫৪ বছর বয়সী সালাহ উদ্দিন দাবি করেছেন, অচেনা এক দল লোক তাকে তুলে নিয়েছিল। এরপর থেকে আর কিছুই তিনি মনে করতে পারছেন না।
সিলেট সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটারের কম দূরত্বের শিলংয়ে কীভাবে এলেন, তাও তিনি বলতে পারেননি।