ঈদযাত্রায় যানজট আর মানুষের দুর্ভোগের পরও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যে মন্তব্য করেছেন, তাকে ‘নিষ্ঠুর রসিকতা’ বলে মনে হয়েছে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে।
Published : 11 Aug 2019, 03:05 PM
রোববার নয়া পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পরিবার পরিজন নিয়ে মানুষের কষ্টের সীমা নেই। আর এটাইকে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব বলছেন, এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক ও আনন্দঘন।
“ঈদযাত্রা নিয়ে ওবায়দুল কাদের সাহেবের এই বক্তব্য দুঃখ দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের সাথে নিষ্ঠুর রসিকতা। আওয়ামী লীগের কাজই হল মানুষের দুঃখ দুর্দশা নিয়ে ইয়ার্কি করা, তামাশা করা।”
ঢাকা থেকে সিলেট ও চট্টগ্রামের পথের ঈদযাত্রা এবার মোটামুটি নির্বিঘ্ন হলেও ভোগান্তিতে পড়েছেন উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমের তিন বিভাগের যাত্রীরা। ট্রেনের সূচি বির্যয়ে কমলাপুরে সারা দিন অপেক্ষা করেও তারা ট্রেন পাচ্ছেন না। আবার ঢাকা-টাঙ্গাইল রোডে দীর্ঘ যানজটে টাঙ্গাইল পার হতেই রাত পেরিয়ে যাচ্ছে।
এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন এলেও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে যানজটের কোনো তথ্য তার কাছে নেই। তবে সেখানে যানবাহন চলছে ধীর গতিতে।
এবার ঢাকার বাস টার্মিনালগুলোতে মানুষের চাপ বেশি দেখছেন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, “ঈদের আনন্দে মানুষ ডেঙ্গুর কথা ভুলে গেছে।”
অবশ্য রোববার তিনি যানজটে ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, মন্ত্রী হিসেবে এর দায় তিনি এড়াতে পারেন না।
শনিবারের বক্তব্যের সূত্র ধরে কাদেরের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “নিশিরাতের ভোটের সরকারের মন্ত্রীদের কথাতেই প্রমাণিত হয়, রোম পুড়ে ছারখার হয়ে গেলেও নিরোর মতো শাসকরা বাঁশি বাজায়। ওবায়দুল কাদের সাহেবরা এই মহাদুযোর্গ ও পথে পথে মহাদুযোর্গের মধ্যে সেই আনন্দের বাঁশিই বাজাচ্ছেন।”
রোববার সকালে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল পরির্দশনে গিয়ে ওবায়দুল কাদেরের দুঃখ প্রকাশের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দুঃখ প্রকাশ করে উনি কী বোঝাতে চাইছেন? উনি এর আগে তো মানতেই চাননি। গতকালই বলেছেন যে, ঈদযাত্রা আনন্দদায়ক। একটি শাসকগোষ্ঠীর অংশ হলেন ওবায়দুল কাদের সাহেব। তাদের তো একটা সমন্বিত পরিকল্পনা থাকবে। সেটা নেই, খালি বড় বড় কথা বলছেন মিডিয়ার সামনে। কালকে যেটা বলছেন, আজকে সেটা নেই।”
কাদের সন্ধ্যায় আবারও তার অবস্থান বদলাতে পারেন- এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, “আমরা এজন্যই এই সরকারের পদত্যাগ চাই, এই মন্ত্রীদের পদত্যাগ চাই। কারণ এদের জবাবদিহিতা নেই, জনসমর্থন নেই।”
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য নজমুল হক নান্নু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ ও আবেদ রাজা উপস্থিত ছিলেন।