আগে থেকেই তাদের বিরোধ ছিল; নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তা সংঘাতেও গড়ায়, যাতে প্রাণ হারাতে হয় দুই কিশোরকে; তবে ভোটের আগে হাতে হাত রেখে নৌকাকে বিজয়ী করার অঙ্গীকার করলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাদেক খান।
Published : 26 Nov 2018, 08:26 PM
কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নানককে বাদ দিয়ে ঢাকা-১৩ আসনে এবার আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে দলের ঢাকা উত্তর মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানকে।
দলীয় কার্যক্রমে সব সময় সক্রিয় থাকা নানককে গত কয়েকদিন অনুপস্থিত থাকলেও সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে একটি মতবিনিময় সভা করেন; সেখানে সাদেক খানকে সমর্থন জানান তিনি।
নানকের আবেগঘন বক্তব্যে মুগ্ধ হয়ে নতুন প্রার্থী সাদেক খান বলেন, “আমার বড় ভাই যে বক্তব্য সবার সামনে দিয়েছেন, আমাকে বুকে তুলে নিয়েছেন এর জন্য আমি ওনাকে স্যালুট জানাই।”
মতবিনিময় সভা শুরুতে গত ১০ বছরে নানক এমপি থাকা অবস্থায় মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগরের উন্নয়নের প্রামাণ্য চিত্র তুলে ধরা হয়।
নানকের নামে স্লোগান দিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেন তার সমর্থকরা। ‘দুর্দিনের নানক ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’, ‘নানক ভাই হারে নাই, হেরে গেছে সততা’ স্লোগান ছিল তাদের মুখে।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বর্তমান সংসদ সদস্য নানক। তিনি বলেন, ‘‘আমি যে দিন থেকে এই এলাকায় নৌকা তুলে নিয়েছিলাম, সেই দিন থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে গেছি। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা এবার নৌকা তুলে দিয়েছেন সাদেক খানের হাতে। তাই সব ভেদাভেদ ভুলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এ দেশকে রক্ষার স্বার্থে নৌকার স্বার্থে আমাদের এক হতে হবে।”
সাদেক খানের উদ্দেশে নানক বলেন, “ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির, নেতার সঙ্গে নেতার নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা হতেই পারে। কিন্তু সকলকে আপনার বুকে তুলে নিতে হবে।“
এরপর সাদেক খান বলেন, “আমার বড় ভাই জাহাঙ্গীর কবির নানক। কেউ বলতে পারবে না, আমি তার সঙ্গে কোনো দিন বেয়াদবি করেছি।”
তিনি বলেন, “আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল ভেদাভেদ ভুলে নৌকার স্বার্থে কাজ করতে হবে। যদি কোনো ভুল করে থাকি, তবে আমিও ক্ষমা চাই, সংশোধন করে নেব।”
আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে কে হবেন নৌকার মাঝি, তা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই নানক ও সাদেক খানের মধ্যে শীতল লড়াই চলছি। সেই শীতল লড়াই চলতি মাসে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিতরণের শুরুর দিন প্রকাশ্য রূপ পায়। ওই দিন সংঘাতে লিপ্ত হয় নানক ও সাদেক খানের কর্মীরা। তাতে দুজন নিহত হন।
তারপর দুইজনের এমন এক হয়ে যাওয়ায় ঢাকা-১৩ আসনেরে নির্বাচনী রাজনীতি নতুন মাত্রা পেল।