জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য খোরশেদ আরা হক বলেছেন, তিনি নির্বাচন চান না; শেখ হাসিনাকেই আরও একাধিক মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চান তিনি।
Published : 08 Jun 2017, 05:23 PM
বৃহস্পতিবার সংসদে বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে খোরশেদ আরা তার এই প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “আমরা কোনো ইলেকশন চাই না। প্রধানমন্ত্রী আছেন, থাকবেন। আরও পাঁচ-দশ বছর দেশ চালাবেন। খালেদা জিয়া বাংলাদেশে থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করেন। এটা কি শোভা পায়?”
কক্সবাজার থেকে এবারই প্রথম সংসদে আসা খোরশেদ আরা প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করলেও অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করেন।
“অর্থমন্ত্রী কথা বোঝেও না, বুঝতেও চান না। উনি না বুইঝাই বাজেট করছেন। গরীবের সঞ্চয় থেকে যদি আবগারি কাটেন, তবে ক্যামনে চলবে? এটা আমরা মানি না। বাজেট শুভঙ্করের ফাঁকি। মহিলারা সঞ্চয় করে। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেবে। কেউ শান্তিতে নেই।”
সংসদ অধিবেশনে মন্ত্রীদের অনুপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমরা কী বলব… একটা মন্ত্রীও নাই। আমরা বলেই যাচ্ছি। মন্ত্রীরা খায়, আর পতাকা উড়ায়া গাড়ি চালায়। আমরা বসে থাকি।”
আর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমালোচনায় জাতীয় পার্টির এই সাংসদ বলেন, “বাংলাদেশ শান্তির দেশ। এর থেকে শান্তি আর কোথাও নেই। আমি খালেদাকে নির্দেশ দিই, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলবেন না। লজ্জা নাই তার? মাথা যেন পাখির বাসা! প্রধানমন্ত্রী যে টাকা জমাইছে তার দিকে নজর পড়েছে।”
এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে টেলিভিশনের টকশো বন্ধ করে দেওয়ারও দাবি জানান বিএনপিবিহীন দশম জাতীয় সংসদের এই বিরোধী দলীয় সদস্য।
টকশোর আলোচকদের দিকে ইংগিত করে তিনি বলেন, “রাতের টক শো বন্ধ করে দেওয়া হোক। খালেদার যোগানো এরা।”
বাজেট আলোচনায় জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, “ব্যাংক খাতে লুটপাট হচ্ছে। দেশ থেকে অর্থ পাচার হচ্ছে বিদেশে। কিন্তু লুটপাটকারী ও পাচারকারীদের বিচার হচ্ছে না।”
“এক বছরে দেশ থেকে ৭৩ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এসব টাকায় কানাডা, মালয়েশিয়ায় ‘সেকেন্ড হোম’ করা হচ্ছে। কানাডার একটি এলাকার নাম হয়ে গেছে ‘বেগমগঞ্জ’। কারণ ওই এলাকায় বাংলাদেশি বেগমসাহেবারা থাকেন।”
সুনামগঞ্জের এই সংসদ সদস্য বলেন, “বিশ্বের কোথাও রিজার্ভ চুরির মতো ঘটনা ঘটে না। সংসদে দাঁড়িয়ে গতবার অর্থমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন, এ ঘটনার প্রতিবেদন তিনি প্রকাশ করবেন। কথা রাখেননি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটিতে কাদের নাম এসেছে, জানা গেল না।”
বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে গত ২ জুন অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ব্যাংকে যাদের এক লাখ টাকা থাকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তারা সম্পদশালী।
তার ওই বক্তব্যের সমালোচনায় পীর ফজলুর বলেন, “কোন যুক্তিতে অর্থমন্ত্রী এ কথা বললেন? টাকা এখন আমরা অর্থমন্ত্রীর হাতেই তুলে দেব। ব্যাংকে রাখব না।”
অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের পঞ্চানন বিশ্বাস, আবু জাহির, কাজী কেরামত আলী, আব্দুল মালেক, আব্দুল মজিদ খান, ওয়ার্কার্স পার্টির টিপু সুলতান এদিন বাজেট আলোচনায় বক্তব্য দেন।