কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯০তম জন্মবার্ষিকী ছিল ২৫ জানুয়ারি। যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মেছিলেন কবি। তাঁর স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে সরকারী উদ্যোগে বাড়ি সংরক্ষণ করা হয়েছে, নাম দেয়া হয়েছে মধুপল্লী। যশোর শহর থেকে কবিবাড়ির দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার।
Published : 31 Jan 2014, 07:28 AM
নানান প্রাচীন স্থাপনা আর কবির স্মৃতিতে সমৃদ্ধ মাইকেল মধুসূদ দত্তের বাড়ি। কুটিরের আদলে তৈরি প্রধান ফটক পেরিয়ে প্রবেশ করতে হয় মধুপল্লীতে। সামনেই কবির আবক্ষ মূর্তি। ভেতরে কবির বসতবাড়ি এখন জাদুঘর। ১৯৬৫ সালে ২৬ অক্টোবর সরকার বাড়িটি পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে।
মধুসূদনের পরিবারের ব্যবহার্য কিছু আসবাবপত্র আর নানান স্মৃতিচিহৃ নিয়ে এ বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মধুসূদন জাদুঘর। চারপাশ প্রাচীরে ঘেরা, ভেতরে বাড়ির পশ্চিম পাশে আছে দিঘি। দিঘির ঘাটে কবি স্নান করতেন, যা সংরক্ষণ করা হয়েছে।
১৮৩০ সালে সাগরদাঁড়ি ছেড়ে কলকাতার খিদিরপুর চলে যান মধুসূদন। কলকাতায় থাকলেও কবির মন পড়ে থাকতো সাগড়দাঁড়িতে। মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে একবার কবি স্ত্রী-পুত্র কন্যাকে নিয়ে নদী পথে বজরায় করে বেড়াতে আসেন সাগরদাঁড়িতে।
কপোতাক্ষ নদের তীরে কবির স্মৃতি বিজড়িত কাঠবাদাম গাছের গোড়া সান বাধানো। বয়সের ভারে মৃতপ্রায় বাদাম গাছ ও বিদায় ঘাট পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এখানে দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে পারেন কপোতাক্ষ নদের সৌন্দর্য।
সাগরদাঁড়ি গ্রামের উত্তর পাশে শেখপুরা গ্রামে আছে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট শেখপুরা জামে মসজিদ। আঠারো দশকে নির্মিত এ মসজিদের ততকালীন ইমাম মখমল আহম্মেদের কাছে ফারসি ভাষা শিখতেন বালক বয়সের কবি। মসজিদের সামনে এর প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ পীর রিয়াজ তুল্লা’র সমাধি আছে।
এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর— প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা এবং অক্টোবর থেকে মার্চ— প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে মধুপল্লী।
মধুপল্লীতে প্রবেশমূল্য দেশি পর্যটক ১০ টাকা, বিদেশি ১০০ টাকা। এছাড়া পার্কিং মূল্য বাস ১০০ টাকা, মাইক্রেবাস, জীপ, গাড়ি ৫০ টাকা। মোটর সাইকেল ১০ টাকা।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও আকাশপথে যশোর যাওয়া যায়। ঢাকার গাবতলী, কল্যাণপুর, কলাবাগান থেকে গ্রিন লাইন পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, ঈগল পরিবহন, শ্যামলী পরিবহনের এসি বাস যশোর যায়। ভাড়া ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা। এ ছাড়া হানিফ, শ্যামলী, সোহাগ, ঈগল ইত্যাদি পরিবহনের নন-এসি বাসও যশোর যায়। ভাড়া ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা।
ঢাকার কমলাপুর থেকে সপ্তাহের শনিবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৬টা ২০ মিনিটে আন্তঃনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেস এবং সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় আন্তঃনগর ট্রেন চিত্রা এক্সপ্রেস যশোরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ভাড়া শোভন ৩৫০ টাকা, শোভন চেয়ার ৪২০ টাকা। প্রথম শ্রেণি চেয়ার ৫৬০ টাকা। প্রথম শ্রেণি বার্থ ৮৪০ টাকা। স্নিগ্ধা শ্রেণি (এসি চেয়ার) ৭০০ টাকা। এসি বার্থ ১,২৬০ টাকা।
যশোর বাস টার্মিনাল থেকে বাসে আসতে হবে কেশবপুর। ভাড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। সেখান থেকে ব্যাটারি চালিত রিকশায় আসতে পারবেন সাগরদাঁড়ি। ভাড়া আনুমানিক ৭০ থেকে ১০০ টাকা।
যেখানে থাকবেন
সাগরদাঁড়িতে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের একটি মোটেল আছে। ভাড়া ৬শ’ থেকে ১২শ’ টাকা।