হৃদয় এবং পেশির মঙ্গল হওয়ার পাশাপাশি, প্রতিদিন হাঁটার ফলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো হয়।
Published : 27 Apr 2017, 06:26 PM
শিকাগো’র এক্সপেরিমেন্টাল বায়োলজি ২০১৭’তে আমেরিকান সাইকোলজিকাল সোসাইটির বার্ষিক সম্মেলনে উপস্থাপিত গবেষণার ফলাফল অনুসারে, হাঁটার সময় মাটিতে পা ফেলার কারণে চাপ তরঙ্গ ধমনির মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যভাবে রূপান্তরিত হয়ে মস্তিষ্কে পৌঁছে, যা সেখানে রক্তসঞ্চালন বাড়াতে পারে।
গবেষণায় নিউ মেক্সিকো হাইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা ‘নন-ইনভেসিভ আল্ট্রাসাউন্ড’ পদ্ধতিতে মস্তিষ্কের দুই পাশের ‘হেমিস্ফেরিক সেলেব্রাল’ বা সিবিএফ’য়ে রক্ত সঞ্চালন পর্যবেক্ষণ করেন। এই প্রক্রিয়ার অংশ নেন মোট ১২ জন স্বাস্থ্যবান প্রাপ্তবয়স্ক তরুণ, আর পরীক্ষাটি করা হয় দাঁড়ানো, বিশ্রাম নেওয়া এবং সাধারণ গতিতে হাঁটা অবস্থায়।
গবেষকরা দেখেন, “দৌড়ানোর তুলনায় হাঁটার ক্ষেত্রে মাটিতে পায়ের আঘাত মৃদু হলেও মস্তিষ্কে রক্তসঞ্চলন বাড়ানোর জন্য তা যথেষ্ট পরিমাণ চাপ তরঙ্গ সৃষ্টি করে।”
দৌড়ানোর তুলনায় হাঁটার ক্ষেত্রে উপকার কম হলেও, সাইকেল চালানোর তুলনায় উপকার বেশি। কারণ সাইকেল চালানোর সময় মাটিতে পায়ে কোনো রকম প্রভাব ফেলে না।
গবেষকরা জানান, “নয়া এই তথ্য ইঙ্গিত করে যে, মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন অত্যন্ত শক্তিশালী এবং চক্রাকার ধমনীয় চাপের উপর সরাসরি নির্ভরশীল। মাটিতে পায়ের আঘাত থেকে সৃষ্ট চাপ তরঙ্গ চক্রাকারভাবে ধমনীয় চাপকে প্রভাবিত করে।”
গবেষকরা আরও বলেন, “হাঁটা, দৌড়ানো এবং সাইকেল চালানো সবকিছুর সঙ্গেই মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনের সম্পর্ক রয়েছে। ব্যায়ামের সময় এই কাজগুলো মস্তিষ্ককে সঠিকভাবে কাজ করতে এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর ভালো থাকবে এমন অনুভুতি সৃষ্টিতে সাহায্য করে।”
‘ওপেন সাইন্স’ নামক জার্নালে প্রকাশিত পৃথক এক গবেষণায় অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার গবেষকরা জানান, মানব বুদ্ধিমত্তার বিবর্তন মস্তিষ্কের আকারের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালনের পরিমাণের সঙ্গে সম্পর্কিত।
মস্তিষ্ক ধারাল করতে, তাকে রক্তের মাধ্যমে অনবরত অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে হবে, বলেন গবেষকরা।
ছবির প্রতীকী মডেল: ফরহাদ। ছবি: ই স্টুডিও।