পাকিস্তানের প্রখ্যাত কাওয়ালি গায়ক আমজাদ সাবরিকে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করার ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইছে উপমহাদেশ জুড়ে। নিন্দার পাশাপাশি প্রয়াত এই শিল্পীর জন্য শোক প্রকাশ করেছেন ভারত ও পাকিস্তানের প্রথম সারির তারকারা।
Published : 24 Jun 2016, 02:59 PM
বুধবার পাকিস্তানের বন্দর নগর করাচিতে লিয়াকতবাদের ব্যস্ত এলাকায় সাবরির গাড়িতে গুলি চালায় দুই বন্দুকধারী। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। পাকিস্তানের জঙ্গী সংঘটনগুলোর কেউই হামলার দায় তাৎক্ষণিকভাবে কেউ স্বীকার করেনি। ৪৫ বছর বয়স্ক সাবরি ছিলেন উপমহাদেশের শীর্ষ কাওয়ালি গায়কদের একজন।
'প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী আলিয়া ভাট বলেন, "এরকম গুণী একজন সংগীত শিল্পীর এমন পরিণতি সত্যিই অনেক দুর্ভাগ্যজনক, হৃদয়বিদারক এবং দুঃখজনক।"
পাকিস্তানে প্রকাশ্যে এরকম গুলিবর্ষণে সাবরির মত একজন শিল্পীর মৃত্যু মেনেই নিতে পারছেন না দেশটির অভিনেত্রী মাহিরা খান। "জঘন্য"- টুইটারে এই এক শব্দেই তিনি প্রকাশ করেছেন তার অনুভূতি।
ভারতীয় অভিনেত্রী তারকা রিচা চাড্ডা টুইটারে লিখেন, "আপনি শিল্পীকে হত্যা করতে পারেন, কিন্তু শিল্প চিরন্তন। বিশ্ব সঙ্গীত অঙ্গনের জন্য এ এক বিরাট ক্ষতি। #স্টপভায়োলেন্স।"
শোক প্রকাশ করেছেন আমজাদ সাবরির স্বদেশী আরেক প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী রাহাত ফাতেহ আলী খান। টুইটে লিখেন, "আমজাদ সাবরির মৃত্যুতে ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। তার আত্মা শান্তি পাক।"
সাবরির মৃত্যুতে শোক জানিয়ে টুইট করেছেন আরেক পাকিস্তানি সঙ্গীত শিল্পী উরাতুলাইন বালুচ।
গত বছরও পাকিস্তানি সংগীত তারকা গুলাম আলীর একটি কনসার্ট নিয়ে তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল ভারতের শিব সেনারা। ওই ঘটনার বছর না ঘুরতেই বন্দুকধারীদের হাতে নিহত হলেন কাওয়ালি সংগীত শিল্পী আমজাদ সাবরি।
শিল্পীদের উপর এমন ক্রোধের কারণ বুঝতে পারছেন না তরুণ সংগীত পরিচালক আরমান মালিক। টুইটে তিনি লিখেছেন, "বুঝতে পারছিনা কেনই বা নিষ্পাপ সংগীতশিল্পীদের হত্যা করা হচ্ছে, যেখানে তারা পৌঁছে দেন সৌহার্দ্য এবং ভালোবাসার বার্তা।"
অভিনেতা আয়ুশমান খুরানা শোক প্রকাশ করে লিখেন, "দুঃখজনক। কাওয়ালি সঙ্গীতকে সত্তর এর দশকে পশ্চিমে নিয়ে গিয়েছিলেন সাবরি ভ্রাতৃদ্বয়।"
পাকিস্তানি জঙ্গী তৎপরতার অস্থিতিশীল পরিস্থিতি চলছে বহু বছর ধরেই, যার শিকার হয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে খেলোয়াড়-রাজনীতিবিদ এবং তারকা মহলও।
সাম্প্রতিক ঘটনাবলির মর্মান্তিকতায় পাকিস্তানের ভবিষ্যত নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানি সঙ্গীত শিল্পী জিমি খান, "সাবরির ঘটনা শুনে হতভম্ভ। পাকিস্তান, আমরা কিসে পরিণত হয়েছি ?"
নিজের নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবী জানিয়েছিলেন সাবরি মৃত্যুর বেশ কিছুদিন আগে, টুইটে এমন বিবৃতি প্রকাশ করেছেন আরেক তারকা আলি জাফার। নিরাপত্তা চেয়েও শেষ পর্যন্ত বন্দুকধারীর গুলিতে সাবরির নিহত হবার ঘটনাকে তিনি দেখছেন অত্যন্ত জঘন্য একটি ব্যাপার হিসেবে।
আমজাদ সাবরি ছিলেন পাকিস্তানের প্রখ্যাত কাওয়ালি শিল্পি হাজী গোলাম ফরিদ সাবরির ছেলে। গত বছর তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার দায়ে একটি মামলা হয়েছিল। তিনি নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি গান করেছিলেন। তবে ওই ঘটনার সঙ্গে তাকে হত্যার কোনও যোগসূত্র আছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত জানা যায়নি।