সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে ঢাকার তিনটি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন না দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
Published : 07 Apr 2015, 06:45 PM
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন হতে পারে বিবেচনায় নিয়ে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন ঘিরে প্রস্তাবিত প্রকল্প তিনটি অনুমোদন দেওয়া হয়নি। নির্বাচনের পর প্রকল্পগুলোতে অনুমোদন দেওয়া হবে।
একনেক বৈঠকের আগে সোমবার নির্বাচন কমিশন তিন সিটি করপোরেশন এলাকায় ভোটের আগে উন্নয়নমূলক প্রকল্প অনুমোদন না দিতে অনুরোধ জানিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়।
মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ঢাকার ওই তিন প্রকল্প বাদ দিয়ে অন্য তিনটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়।
ঢাকা সিটি করপোরেশনের (উত্তর ও দক্ষিণ) নির্বাচনের কারণে ২৫২ কোটি টাকার ঢাকা ওয়াসার অন্তবর্তী পানি সরবরাহ প্রকল্প, ২০০ কোটি টাকার গুলশান-বনানী-বারিধারা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প এবং প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার ২৮ জেলায় (ঢাকাসহ) পানি সরবরাহ, সেনিটেশন, স্বাস্থ্য উন্নয়নের এই তিন প্রকল্পে অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
এই প্রকল্পগুলোতে অনুমোদন না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, একনেক সভায় ছয়টি প্রকল্প ওঠার কথা থাকলেও তিনটি প্রকল্প শেষ পর্যন্ত বাদ দেওয়া হয়। এই তিনটি প্রকল্প ঢাকা সিটি করপোরেশনের আওতায় পড়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
“প্রকৃত অর্থে, ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের কারণে নির্বাচন আচরণবিধির সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে বিবেচনায় এই তিনটি প্রকল্পে অনুমোদন না দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সিটি করপোরেশনের নির্বাচন শেষে প্রকল্প ৩টিতে অনুমোদন দেওয়া হবে।”
সভায় অনুমোদিত তিনটি প্রকল্প হচ্ছে- ৪৪২ কোটি টাকার সিলেট সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, ৭২ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা-বরিশাল রুটে ২টি যাত্রীবাহী জাহাজ ক্রয়সংক্রান্ত প্রকল্প এবং ১২৩ কোটি টাকায় দেশের ৪৮৯টি উপজেলায় ৪৯০টি খেলার মাঠকে স্টেডিয়ামে রূপান্তর প্রকল্প।
শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
৯ মাসে এডিপির ৪৩% বাস্তবায়ন
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পমন্ত্রী বলেন, চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৪৩ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।
গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৪০ শতাংশ।
মন্ত্রী জানান, টাকার অংকে চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে ৩৬ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। গত অর্থবছরে একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ২৯ হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে মূল এডিপির আকার ধরা হয় ৮০ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা (সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ছাড়া)। বাস্তবায়ন সন্তোষজনক না হওয়ায় ইতিমধ্যে তা কমিয়ে ৭৫ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।