শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে নায়ক লিয়াম প্লানকেট। নুয়ান প্রদিপের বল লং অফ দিয়ে উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করে দলের হার এড়িয়েছেন এই পেসার। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার প্রথম ওয়ানডে হয়েছে টাই।
Published : 22 Jun 2016, 03:51 AM
মঙ্গলবার ট্রেন্ট ব্রিজে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ২৮৬ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ৮ উইকেটে ২৮৬ রান করে ইংল্যান্ড। ওয়ানডেতে এরচেয়ে বেশি রানে টাই আছে আর মাত্র তিনটি।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি ইংল্যান্ডের। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, সুরঙ্গা লাকমলের দারুণ বোলিংয়ে নবম ওভারে ৩০ রানের মধ্যে ফিরে যান স্বাগতিকদের চার ব্যাটসম্যান। তাদের কেউ দুই অঙ্কে যেতে পারেননি।
২০০৯ সালের পর এই প্রথম ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের চার জন এক অঙ্কে ফিরে গেলেন। নিজের দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা ষষ্ঠ ইনিংসে অর্ধশতক করার সুযোগ ছিল অ্যালেক্স হেলসের সামনে। কিন্তু এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান যেতে পারেননি দুই অঙ্কেই।
প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে ফিরে যান অধিনায়ক ওয়েন মর্গ্যান, দ্রুত তাকে অনুসরণ করেন মঈন আলি। ৮২ রানে ৬ উইকেট হারানো ইংল্যান্ডের সামনে ছিল বড় ব্যবধানে হারের শঙ্কা।
সেখান থেকে দলকে লড়াইয়ে ফেরান জস বাটলার ও ক্রিস ওকস। সপ্তম উইকেটে এই দুই জনে গড়েন ১৩৮ রানের জুটি। ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটি সপ্তম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। আর সব দেশ মিলিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গত গ্রীষ্মেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে বাটলার-আদিল রশিদের ১৭৭ এখনও সেরা।
আগের ওভারে বাটলারের ক্যাচ ছাড়া সিকুগে প্রসন্ন বোলিংয়ে এসে বাটলারকে বিদায় করে ভাঙেন বিপজ্জনক হয়ে উঠা জুটি। ৯৯ বলে ৯৩ রান করে বাটলার ফিরে যাওয়ার পর দলকে এগিয়ে নেন ম্যাচ সেরা ওকস।
আট নম্বরে নেমে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা ওকস ৯২ বলে অপরাজিত থাকেন ৯৫ রানে। আগের রেকর্ডটি ছিল কেনিয়ার টমাস ওডোয়োর অধিকারে। ২০০৬ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৮৪ রান করেছিলেন এই অলরাউন্ডার।
প্লানকেট অপরাজিত থাকেন ২২ রানে।
চোটের জন্য মাঠ ছাড়ার আগে ৬ ওভারের বেশি করতে পারেননি শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক। এই সময়ে ২২ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন তিনি।
এর আগে শুরুটা ভালো হয়নি শ্রীলঙ্কার। ২৬তম ওভারে ১২০ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দলটি। সেখান থেকে রানের গতি বাড়ানোর কাজটা করেন প্রসন্ন। তার পাগলাটে ব্যাটিংয়ে ৭.৪ ওভারে ৬৮ রান যোগ করে শ্রীলঙ্কা।
প্রথম ১৪ বলে ১৪ রান করেন প্রসন্ন। পরের ১২টি বল এমন- ৬, ০, ৬, ৬, ৬, ০, ৪, ০, ৪, ৪, ৪, ৪। এই সময়ে ১২ বলে ৫৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। শেষ পর্যন্ত ২৮ বলে ৫৯ রান করে ফিরেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত ম্যাথিউসের অধিনায়কোচিত ৭৩ আর ফারভিজ মাহরুফের অপরাজিত ৩১ রানে ভর করে তিনশ’ রানের কাছাকাছি পৌঁছায় শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ।
আগামী শুক্রবার বার্মিংহামে হবে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ২৮৬/৯ (পেরেরা ২৪, গুনাথিলাকা ৯, মেন্ডিস ১৭, চান্দিমাল ৩৭, ম্যাথিউস ৭৩, প্রসন্ন ৫৯, থারাঙ্গা ৩, শানাকা ২০, মাহরুফ ৩১*, লাকমল ৭; ওকস ২/৫৬, উইলি ২/৫৬, প্লানকেট ২/৬৭, মঈন ১/৬৯)
ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৮৬/৮ (জেসন ৩, হেলস ৪, রুট ২, মর্গ্যান ৪৩, বেয়ারস্টো ৩, বাটলার ৯৩, মঈন ৭, ওকস ৯৫*, উইলি ৭, প্লানকেট ২২*; ম্যাথিউস ২/২২, প্রদিপ ২/৬৪, লাকমল ২/৬৫, প্রসন্ন ১/৪৩, মাহরুফ ১/৫৯)
ফল: টাই
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ক্রিস ওকস।