নতুন বাজেটে শতভাগ খুশি হতে না হতে পারলেও ‘অন্তত ৭০ ভাগ’ খুশি হওয়ার কথা জানিয়েছেন তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সমিতির সভাপতি রুবানা হক।
Published : 13 Jun 2019, 07:12 PM
দেশের রপ্তানি আয়ের অন্যতম প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য প্রণোদনা হিসেবে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী করলেও তা ‘যৎসামান্য’ বলে মনে করছেন বিজিএমইএ সভাপতি।
আওয়ামী লীগের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বছরে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানিতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে আরও দুই হাজার ৮২৫ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “এখন তৈরি পোশাকের চারটি খাত ৪ শতাংশ রপ্তানি প্রণোদনা পাচ্ছে। আমি আগামী অর্থবছর থেকে তৈরি পোশাকের বাকি সব খাতের জন্য এক শতাংশ রপ্তানি প্রণোদনা প্রস্তাব করছি।”
বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে বিকালেই এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন বিজিএমইএ নেতারা।
রুবানা বলেন, “এ বাজেট নিঃসন্দেহে জনকল্যাণমুখী বাজেট। শিল্পের দিক থেকে যদি বলেন, তাহলে বলব শতভাগ খুশি না হলেও শতকরা ৭০ ভাগ খুশি আমরা।”
ঘোষিত প্রণোদনাতে খুশি হতে না পারার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “ক্যাশ ইনসেনটিভ আসলে অন্তত ছোট্ট একটি ফিগার। পোশাক খাত এমন একটি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে, যেখানে এই ইনসেনটিভ আমরা যৎসামান্য মনে করি। অন্তত পক্ষে আরও তিন পারসেন্টও যদি আমাদের দিতেন, তাহলে লাভ হত।”
রুবানা জানান, বিজিএমইএ আটটি পণ্যে ‘সেফটি ইকুইপমেন্ট’ চাইলেও তার পাঁচটিতেও পাওয়া নিয়েও হতাশ তিনি।
“আমরা এক্সাম্পশন চেয়েছিলাম। ওয়াসায় , পানি বিদ্যুতে শতভাগ এক্সাম্পশন এসেছে, সেজন্য কৃতজ্ঞ। আটটি পণ্যে সেফটি ইকুইপমেন্ট চেয়েছিলাম, দেওয়া হয়েছে ৫টিতে। মনে করি, বাকিগুলোতে দিলে ভালো হত আমাদের জন্য।”
যোগাযোগ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোকে স্বাগত জানিয়ে রুবানা বলেন, “শিল্পের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য উৎসাহ দেবে। ইনফ্রাস্ট্রাকচার কমিউনিকেশনের জন্য খুব দরকার। আগে কমিউনিকেশন বাজেট ছিল ৫৩ হাজার ৮১০ কোটি টাকা, সেখানে এবার ৬১ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা। আমরা মনে করি, এটিও আমাদের জন্য ভালো দিক। বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি।”
ভ্যাট ও কাস্টমস আইনে সাংঘর্ষিক জায়গা যত দ্রুত সম্ভব দূর করার প্রতিশ্রুতি আসায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে বিজিএমইএ।
আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে স্ক্যানার ব্যবহারের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে রুবানা বলেন, “আমাদের পোশাক খাতে স্বচ্ছতা আসুক, আমরা সে নিশ্চয়তা চাই। আমরা মনে করি, অনেক রকম দুর্নাম থেকে আমাদের অব্যাহতি দেবে।”
ব্যাংক ঋণে সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনতে সরকারের ঘোষণা দ্রুত কার্যকরের আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি।
নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বাজেটে ‘কিছু নেই’ উল্লেখ করে হতাশা প্রকাশ করে রুবানা বলেন, “শিশুদের জন্য অ্যালোকেশন আলাদা আছে, কিন্তু নারীদের জন্য দেখিনি। নারী উদ্যোক্তাদের শোরুমের উপর কোনো ট্যাক্স ধরা হবে না, সেটি অবশ্য আমরা যৎসামান্য মনে করি।”
শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোকে স্বাগত জানান বিজিএমইএ সভাপতি। নানা বিষয়ে উদ্ভাবনকে উৎসাহ দিতে ‘ইনোভেশন ইন্ডাস্ট্রি স্কিম’ রাখার প্রস্তাবও করেন তিনি।