ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনার পর রাতে এটিএম বুথের সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
Published : 03 Jun 2019, 10:55 PM
ডাচ বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন জানান, একটি করে মেশিন যেখানে আছে সেসব বুথে সকাল ৭টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত টাকা তোলা যাবে।
আর ফার্স্ট ট্র্যাক বুথে (যেখানে একাধিক এটিএম আছে) টাকা তোলা যাবে রাত ১২ টা পর্যন্ত।
ঈদের ছুটি, অর্থাৎ ৮ জুন পর্যন্ত এই নিয়ম চলবে বলে ব্যাংকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সগীর আহমেদ জানান।
এ ধরনের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের এসএমএস বা মেইল করে এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে সময়ের বিধিনিষেধের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়ার নিয়ম।
কিন্তু ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বেশ কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, তারা কেউ কোনো বার্তা পাননি।
ফার্স্ট ট্র্যাক বুথ রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা রাখার কথা বলা হলেও সোমবার মগবাজার এলাকায় কয়েকটি ফার্স্ট ট্র্যাক বুথ ঘুরে রাত ১০টার সময়ই বন্ধের তোড়জোড় শুরু করতে দেখা গেছে।
নিরাপত্তাকর্মীদের প্রশ্ন করা হলে তারা বলেছেন, তাদের ওপর নির্দেশ আছে, ঈদের ছুটিতে রাত ১০টার পর বুথ বন্ধ থাকবে।
গত বুধবার রাজধানীর বাড্ডায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একটি এটিএম বুথ থেকে তিন লাখ টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে কোনো গ্রাহক তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হননি বলে ব্যাংকের তরফ থেকে জানানো হয়।
পরদিনই খিলগাঁও তালতলা মার্কেটের সামনে ডাচ বাংলা ব্যাংকের আরেকটি বুথ থেকে টাকা তোলার সময় এক বিদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পান্থপথের একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আরও পাঁচ বিদেশিকে।
পুলিশ বলছে, জালিয়াতরা এক ধরনের কার্ড ব্যবহার করেছে, যা বুথের এটিএম মেশিনের কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় এবং মূল সার্ভারে বার্তা পাঠানো বন্ধ করে দেয়। তারপর বুথের টাকা কমান্ড অনুযায়ী বের করে দেয়। তবে কোনো ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কাটে না।
জালিয়াতরা কীভাবে সিস্টেম হ্যাক করেছে তা বুঝতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কাজ করছে ডাচ বাংলা কর্তৃপক্ষ।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম বলেন, “এই মুহূর্তে আমরা ফিজিক্যাল প্রোটেকশন বাড়িয়েছি। তবে টেকনিক্যাল প্রোটেকশন নিতে পারিনি, কারণ এখনো আমরা ভালোভাবে জানি না চুরিটা কীভাবে করা হল। আমরা আমাদের বুথগুলোতে নিরাপত্তা বাড়িয়েছি, পাশাপাশি চারদিকে সর্তকতা অবলম্বন করছি।”
১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরু করা ডাচ-বাংলা ব্যাংকের গ্রাহক সংখ্যা এখন ২ কোটি ৫০ লাখ বলে এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সারাদেশে এ ব্যাংকের শাখা রয়েছে ১৮৪টি।
এছাড়া ৫ হাজারের মত এটিএম বুথ এবং ৮০০টি ফাস্ট ট্র্যাক সার্ভিস রয়েছে ব্যাংকটিতে। এই সংখ্যা অন্য যে কোনো ব্যাংকের চেয়ে বেশি।