Published : 30 Dec 2016, 11:52 AM
২০১৫ সালের অক্টোবরে মাকড়শা ও শিশিরের যুগলবন্দিতার শিল্প সৌন্দর্য নিয়ে নিপুণ জালের বুনন কারিগর মাকড়শা! শিরোনামে একটি আর্টিকেল লিখেছিলাম। তেমন মাকড়শা জাল ও শিশিরিকা এবার ডিসেম্বরেও আমাকে যারপরনাই মুগ্ধ করল।
ভূমি'র গহ্বরের আলো-আঁধারিতে আপন খেয়ালে জাল বুনে চলে মাকড়শা। সবুজ পত্রপল্লব তাকে চারপাশে সাজিয়ে তোলে।
আর সাত সকালে শিশির এসে সেই নিপুণ জালে এঁকে দেয় স্ফটিকবৎ স্বচ্ছ জলের নান্দনিক আলপনা।
সেই শিশিরিকা মুক্তোমালায় সাজানো আলপনায় দৃষ্টি আটকে গেলে জুড়িয়ে যায় প্রকৃতি পরিব্রাজকের প্রাণ। মুদিত আঁখিতে ভাবনার সুখপাখিরা ডানা মেলে। এই তো আমার বাংলা মায়ের সাদাসিধে রূপসুধা।
পরিব্রাজকের ভাবনার সেবেলায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অমৃত সুরে জানান দিয়ে যান-
তোরা বসে গাঁথিস মালা, তারা গলায় পরে।
কখন যে শুকায়ে যায়, ফেলে দেয় রে অনাদরে॥
মাকড়শা'র জালে এরূপ তিলেতিলে জমানো শিশিরমুক্তোর অনিন্দ্য শিল্পিতা অবলোকন করবার পর পরিব্রাজক আনমনে কবিগুরুর প্রেম ও প্রকৃতিবন্দনা গীতে মাতেন-
কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া
তোমার চরণে দিব হৃদয় খুলিয়া।
চরণে ধরিয়া তব কহিব প্রকাশি
গোপনে তোমারে, সখা, কত ভালোবাসি।
ভেবেছিনু কোথা তুমি স্বর্গের দেবতা,
কেমনে তোমারে কব প্রণয়ের কথা।
ভেবেছিনু মনে মনে দূরে দূরে থাকি
চিরজন্ম সঙ্গোপনে পূজিব একাকী—
ফারদিন ফেরদৌস
লেখক ও সাংবাদিক
২৯ ডিসেম্বর ২০১৬