১৪ই ফেব্রুয়ারি নাকি বিশ্ব ভালবাসা দিবস । আমার লেখাটা শুধু বাঙ্গালী আর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিবেচ্য । কারন কারও কৃষ্টি এবং সংষ্কৃতি না বুঝে মন্তব্য করা অনুচিৎ ।
এই ভালবাসা দিবস যদি 'বিশ্ব ভালবাসা দিবস' হয় তাহলে সবাইকেই ভালবাসা জানান । বিশেষ একজনকে ভালবাসার জন্য বছরে বিশেষ একটা দিনই কেন , তাকে তো ভালবাসতে হবে বছরের প্রতিটি দিনে সমান ভাবেই ! এতই যদি ভালবাসা কপচানোর সখ তাহলে যে কাজটি অন্য কোন দিনে করা হয়না তেমন কিছু করুন না কেন যাতে ভালবাসার অনুভব সার্বজনীনতা পায় ! ভালবাসা দিবসে বিশেষ ভাবে ভালবাসার জন্য যে রিকশায় চড়ে প্রেমিকার সাথে মিলিত হতে যাচ্ছেন ফুল নিয়ে , একটা ফুল সেই রিকশাওয়ালাকে দিয়ে বলুন, ' ভাই ,আপনার জন্য ভালবাসা দিবসের শুভেচ্ছা।' আজ আপনার গাড়ির জানালায় যে মেয়েটি দৌড়ে এসে আবদার করছে ফুল কেনার জন্য , একটি ফুল কিনে সেই মেয়েটিকে দিয়ে বলুন, ' এই মেয়ে, তোমার জন্য আজকের দিনের শুভেছা।' পারলে কিছু টাকা দিয়ে বলুন, আজকের দিনে বাড়িতে বাবা-মা-ভাই এর সাথে মজা করে কাটাও । যে ট্রাফিক পুলিশ তার ভালবাসার মানুষের সংগ ছেড়ে আপনাদের জন্য রাস্তা জানজট মুক্ত রাখার চেষ্টা করছে তাকে একটি ফুল দিয়ে বলুন , ' আপনার জন্য ভালবাসা দিবসের শুভেচ্ছা । ' বাড়িতে যে কাজের মানুষটি কিংবা রেস্তোরায় যে বাবুর্চি এবং ওয়েটার আপনাকে বিশেষ দিনের বিশেষ খাবার পরিবেশন করছে , একটি ফুল তাকে দিয়ে বলুন এটা তার জন্য ভালবাসা দিবসের শুভেচ্ছা । পার্কে ,উদ্দানে , রাস্তার মোরে যে পুলিশ সদস্যরা আপনার এবং আপনার ভালবাসার মানুষের নিরাপত্তা দিচ্ছে, একটি ফুল তাকে দিয়ে বলুন , ভালবাসা দিবস আপনার এবং আপনার আপনজনের জন্যও হোক আনন্দময় ।
আমাদের দেশে এই ভালবাসা দিবস যে আমদানি করেছে তার উদ্দেশ্য আমি জানিনা তবে সেটার উন্মাদনা ছড়িয়ে দেবার জন্য কর্পোরেট বানিজ্যওয়ালাদের উদ্দেশ্য বুঝতে খুব কষ্ট হবার কথা নয় । এই দিনকে ঘিরে ফুল , নতুন কাপড় ( লাল রঙের শাড়ি-পাঞ্জাবী বিশেষ করে )
রেস্তোরা , ক্যান্ডি আর কার্ড-এর যে বিশাল বানিজ্য হয় সেই লোভ সামাল দেয়া কি সম্ভব ! মোবাইল ফোন কোম্পানি আর মস্তফা সরোয়ার ফারুকী টাইপের লোকেরতো আরও এককাঠি এগিয়ে । আমি- আপনি আমাদের ভালবাসার মানুষকে ভালবাসা জানাতে একান্তে কি গোপন কথা লিখলাম সেটা জানিয়ে তাদের কাছে পাঠাতে হবে প্রতিযোগীতার জন্য । সাথে থাকে লোভনীয় পুরষ্কারের ঘোষনা । ভালবাসার এমন বানিজ্যকরন , ছিঃ ! ছিঃ ছিঃ .. !!
