জাতীয় সংসদ ভবনের স্থপতি লুই আই কানের প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মূল নকশা আনতে কত টাকা লাগবে সে হিসেব করতে এক বছর পার করে দিয়েছে সংসদ সচিবালয় ও স্থাপত্য অধিদপ্তর।
Published : 27 May 2015, 09:35 PM
গত বছর সংসদ ভবনের মূল নকশা আনার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর পর লুই কানের প্রতিষ্ঠান ডেভিড অ্যান্ড উইজডমের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে স্থাপত্য অধিদপ্তর।
বুধবার জাতীয় সংসদ সচিবালয় কমিশনের ২৬তম বৈঠকে এ বিষয়ে অগ্রগতি হিসেবে জানানো হয়, নকশা আনতে মোট চার লাখ ৫৯ হাজার ৮০০ ডলার খরচ পড়বে।
এক বছরে এই অগ্রগতি সম্পর্কে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই এক বছরে এই হিসেবটা বের হয়েছে। এটা প্রস্তাবিত। এখন এই হিসাব যাচাই-বাছাই করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আজকে (বুধবার) সংসদ কমিশনের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। টাকার অংক সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী উভয়ই বলেছেন এই পরিমাণ টাকা কোন সমস্যা নয়। ঐতিহ্যপূর্ণ এই ভবনের নকশার পুরোটা আমাদের কাছে থাকা উচিত।”
জাতীয় সংসদ ভবনের চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণ নিয়ে সমালোচনার প্রেক্ষিতে স্থপতি লুই আই কানের করা মূল নকশা আনার উদ্যোগ নেওয়া হয় গত বছর।
সে সময় গণপূর্ত অধিদপ্তর, স্থাপত্য অধিদপ্তর এবং সংসদের নিরাপত্তা শাখার সঙ্গে এক বৈঠকে শেখ হাসিনা নকশার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চান। তখনই মূল নকশার ‘কিছু অংশ’ বাংলাদেশের কাছে না থাকার বিষয়টি উঠে আসে।
সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তীতে লুই কান কয়েকবার বাংলাদেশে কাজের জন্য আসেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মূল নকশা সংশ্লিষ্ট কিছু ‘প্ল্যান’ তিনি হস্তান্তর করেত পারেননি। পরবর্তীতে এ নিয়ে কোনো সরকার আগ্রহ দেখায়নি।
গত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলেও সংসদ এলাকায় মূল নকশার বাইরে স্পিকার-ডেপুটি স্পিকারের জন্য বাসভবন বানানো হয়।
উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই তখন ভবন দুটি তৈরি হয়। এ সংক্রান্ত একটি মামলা এখনও বিচারাধীন।
২০১৩ সালের ২ জুন সংসদ কমিশনের বৈঠকে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদ ভবন সংরক্ষণে মূল নকশার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় এমন কিছু না করার ব্যাপারে মত দেন। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলারও পরামর্শ দেন তিনি।
১৯৬১ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খানের আমলে বর্তমান সংসদ ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সে সময় স্থপতি মাজহারুল ইসলামকে এই ভবনের স্থপতি নিয়োগ করা হয়। তার প্রস্তাবেই লুই আই কান এই প্রকল্পের প্রধান স্থপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি এ ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।