সাবমেরিন কেবলের অব্যবহৃত ব্যান্ডউইডথ ভারতে রপ্তানির একটি চুক্তিতে সায় দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তবে এতে বাংলাদেশে কোনো সঙ্কট হবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
Published : 20 Apr 2015, 06:09 PM
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের এই প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা জানিয়েছেন।
ব্যান্ডউইডথ রপ্তানিতে ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড (বিএসএনএল) এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিসিএল) মধ্যে চুক্তি সই হবে।
সাবমেরিন কেবলের অব্যবহৃত ব্যান্ডউইডথ বিক্রি করে ৬০ কোটি টাকা আয়ের কথা ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু বকর সিদ্দীক আগে বলেছিলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “এ চুক্তি অনুযায়ী ১০ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইডথ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লিজে সরবরাহ করা হবে। এতে বাংলাদেশ বছরে বৈদেশিক মুদ্রায় ৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা পাবে (এক দশমিক দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলার)।”
এই চুক্তির মেয়াদ হবে তিন বছর। চুক্তি অনুসারে ভারতের চাহিদা অনুযায়ী ব্যান্ডউইডথ রপ্তানির পরিমাণ ৪০ জিপিবিএস পর্যন্ত করা যাবে।
বাংলাদেশের একমাত্র সাবমেরিন কেবল সি-মি-ইউ-৪ এর কক্সবাজার ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে আখাউড়া হয়ে আগরতলা দিয়ে এ ব্যান্ডউইডথ রপ্তানি হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, বর্তমানে ২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথসহ সাবমেরিন কেবলে (সি-মি-ইউ-৪) সংযুক্ত আছে বাংলাদেশ, যার মধ্যে প্রায় ৩০ জিবিপিএস ব্যবহৃত হচ্ছে। অব্যবহৃত থেকে যায় ১৭০ জিবিপিএস।
“রপ্তানির পরও অনেক অব্যবহৃত থেকে যাবে,” বলেন মোশাররফ হোসাইন।
“ভবিষ্যতে ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়লেও কোনো সঙ্কট হবে না। কারণ দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলে সংযুক্ত হলে মোট ব্যান্ডউইডথ হবে ১ হাজার ৫০০ জিবিপিএস। ইন্টারনেট সংযোগে যখন আমরা ইউনিয়ন পর্যায়ে যাব, তখনও কোনো সঙ্কট হবে না।”
ভারতে ব্যান্ডউইডথ রপ্তানি করে যে অর্থ পাওয়া যাবে, তার এক-চতুর্থাংশ দিয়ে বিএসসিসিএ’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন হয়ে যাবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, “এ চুক্তি একটি ‘উইন-উইন সিচুয়েশন’, দুই দেশের এতে লাভ হচ্ছে। বাংলাদেশ অব্যহৃত ব্যান্ডউইডথ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা পাচ্ছে। আর ভারত উত্তর-পূর্বাঞ্চলে খুব সহজেই ইন্টারনেট পাচ্ছে, যে সংযোগ তাদের মুম্বাই থেকে আনতে হত।”
এ চুক্তির জন্য লিগ্যাল ভেটিং এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ নেওয়ার পর ভারত যদি চায় তাহলে ৪০ জিবিপিএস পর্যন্ত রপ্তানি করা যাবে।
পরবর্তীতে ব্যান্ডউইডথ এর দাম কী হবে- সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “এ দর পারস্পরিক পরামর্শে করা হয়েছে। আগামীতে একই প্রক্রিয়ায় করা হবে।”