ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় পৌনে এক লাখ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের সম্ভাব্য প্যানেল প্রস্তুতের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
Published : 04 Mar 2015, 09:19 PM
এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে ৫৫ হাজার এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে ১৫ হাজারেরও বেশি প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং, পোলিং ও সহকারী পোলিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।
মধ্য জুনের মধ্যে রোজার আগে এইচএসসি পরীক্ষার ফাঁকে এ তিন সিটি কর্পোরেশনে ভোট করার পরিকল্পনা ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন।
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঢাকার দুই ভাগে ৪৩ লাখ ভোটারের বিপরীতে এবার ২ হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্র হবে। ১০ শতাংশ অতিরিক্ত নিয়ে প্রায় ৬০ হাজার কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তত রাখা হবে।
চট্টগ্রামে ১৮ লাখেরও বেশি ভোটারের বিপরীতে ১ হাজারেরও বেশি ভোট কেন্দ্র হবে। ১০ শতাংশ অতিরিক্ত নিয়ে ২০ হাজারেরও বেশি ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল করা হবে।
বুধবার ইসির উপসচিব সামশুল আলম ঢাকা ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে এ নির্দেশনা পাঠান।
ইতোমধ্যে হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রস্তুত ও সরেজমিন পরিদর্শন করে সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রস্তুতের জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান ইসির এ কর্মকর্তা।
জানতে চাইলে ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ বলেন, “প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং, পোলিং ও সহকারী পোলিং কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুতের নির্দেশনা আজ পেয়েছি। কাল সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থায় তাদের লোকবলের তালিকা চেয়ে চিঠি পাঠাব।”
জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের এ নির্দেশনা দেওয়া হবে বৃহস্পতিবার।
ঢাকা উত্তরে ২৩ লাখ ৯৮ হাজার ৪৩২ ভোটার ও দক্ষিণে ১৮ লাখ ৯০ হাজার ৯৫৯ জন ভোটার রয়েছে।
৪২ লাখ ৮৯ হাজার ৩৮৩ ভোটারের বিপরীতে এবার অন্তত ২১০০ এর মতো ভোটকেন্দ্রের প্রয়োজন হবে বলে জানান ইসির এ উপসচিব।
মিহির বলেন, “প্রায় ৫৫ হাজার ভোটকক্ষের জন্য সম পরিমাণ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার দরকার পড়বে। প্যানেলে আমরা অন্তত ৬০ হাজারের মতো ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা রাখব।”
তিনি জানান, ১৬ মার্চের মধ্যে প্যানেল প্রস্তুতের কাজ শেষ করা হবে। যথাসময়ে ভোটকেন্দ্রও চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে। যাতে করে ভোটের নির্দেশনা এলে কোনো অসুবিধা না হয়।
চট্টগ্রামে ১৮ লাখ ২২ হাজার ৮৯২ জন ভোটারের বিপরীতে এক হাজারেরও বেশি ভোট কেন্দ্র লাগতে পারে।
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন জানান, নিরপেক্ষ, দক্ষ ও যোগ্যদের নিয়ে ভোট কর্মকর্তা নিয়োগে প্রায় ২০ হাজারের মতো কর্মকর্তা নিয়ে প্যানেল রাখা হবে। এ লক্ষ্যে শিগগির স্থানীয় সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হবে।
ভোটের সময় প্যানেল থেকে অন্তত ১৬ হাজার কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানান তিনি।
ইসির সহকারী সচিব মো. রাজীব আহসান স্বাক্ষরিত আলাদা চিঠিতে মাঠ কর্মকর্তাদের বলা হয়, প্যানেলভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঠিকানা, বাসস্থান, টেলিফোন নম্বরসহ আনুষাঙ্গিক তথ্যাদি সংগ্রহ করতে হবে।
ইসির উপ সচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ৯ মার্চ কমিশন সভা রয়েছে। ওই সভার আলোচ্যসূচিতে ডিসিসি ও সিসিসি নির্বাচনের বিষয়টি না থাকলেও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হতে পারে। তাতে নতুন নির্দেশনা আসতে পারে।
শিগগির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের সময়সূচিও নির্ধারণ হতে পারে বলে জানান তিনি।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, কখন ভোট হবে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেই সিদ্ধান্ত হবে। কমিশন তাদের সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখবে।
ঢাকা ও চট্টগ্রামে আগের ভোটের তথ্য
চট্টগ্রামে সর্বশেষ ভোট হয়েছিল ২০১০ সালে। ঢাকায় ভোট হয় ২০০২ সালে। তবে ২০১২ সালে ডিসিসি ভোটের সব প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল।
২০১২ সালে ডিসিসিতে মোট ভোটার ছিল ৩৮ লাখ ৫২ হাজার ৯২৬ জন। দু ভাগে ৯২টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে ঢাকা উত্তরে ১২টি, দক্ষিণে ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড রয়েছে। সম্ভাব্য মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১ হাজার ৯৫৭টি ও ভোটকক্ষ ১০ হাজার ২৫৬টি।
২০১০ সালে সিসিসির ওয়ার্ড সংখ্যা ৪১টি। এর মধ্যে সংরক্ষিত ১৪টি। সর্বশেষ তালিকায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৬ লাখ ৯৪ হাজার ৯৫৫। ভোট কেন্দ্র ৬৭৪টি; ভোট কক্ষ ৪ হাজার ৭৪৮টি। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ১৪ হাজার ৯১৮ জন। এর মধ্যে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ৬৭৪ জন, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ৪৭৪৮ জন এবং পোলিং কর্মকর্তা ৯৪৯৬ জন ছিল।