রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলাম হত্যার ঘটনায় ‘জামায়াত নিয়ন্ত্রিত’ জঙ্গি সংগঠনের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়ার কথা বলেছে পুলিশ।
Published : 19 Nov 2014, 05:43 PM
এ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১১ জনকে রিমান্ডে নেওয়ার শুনানিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিহার থানার ওসি আলমগীর হোসেন আদালতের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন।
তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জামায়াত-শিবির বিভিন্ন সময়ে গোপনে বিভিন্ন নামে জঙ্গি কর্মকাণ্ড চালায়- এমন তথ্য তাদের হাতে আছে।
“শফিউল হত্যার পেছনেও জামায়াতে ইসলাম নিয়ন্ত্রিত জঙ্গি সংগঠনের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। ১১ জনকে রিমান্ডে নেওয়ার শুনানির সময় আদালতকে সে তথ্যই জানানো হয়েছে।”
মহানগর বিচারিক হাকিম শারমিন আক্তার বুধবার দুপুরে পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করে ১১ জনকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
এরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জামায়াত নিয়ন্ত্রিত বিনোদপুর ইসলামিয়া কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ন কবির, ওই কলেজের শিক্ষক ফজলুল হক, চৌদ্দপাই এলাকার পল্লী চিকিৎসক মোশারফ হোসেন, আব্দুল্লা আল মাহামুদ, মশিউর রহমান, হাসিবুর রহমান, জিন্নত আলী, সাইফুদ্দিন, রেজাউল করিম, সাগর ও আরিফ।
পুলিশ বলছে, তারা সবাই জামায়াত সমর্থক। আসামিদের আইনজীবীও বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
শনিবার বিকালে ক্যাম্পাস সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় লালনভক্ত শফিউলকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এন্তাজুল হক পরদিন মতিহার থাকায় একটি হত্যা মামলা করেন, যাতে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
শফিউলের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে সৌমিন শাহরিদ জেভিনের দাবি, তার বাবার হত্যাকাণ্ডে ইসলামী জঙ্গি সংগঠনগুলো জড়িত।
হত্যাকাণ্ডের ঘণ্টা পাঁচেক পর আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২ নামে একটি ফেইসবুক পৃষ্ঠায় অধ্যাপক শফিউলকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে তাকে হত্যার দায় স্বীকার করা হয়, যদিও ওই পৃষ্ঠা খোলার নেপথ্যে কারা তা বের করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সংস্থা।
রিমান্ড শুনানিতে অংশ নিয়ে আদালত পরিদর্শক আব্বাস হোসেন ও তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন আদালতকে বলেন, গ্রেপ্তাররা সবাই জামায়াত ও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের কাছ থেকে আরো তথ্য পাওয়া যাবে।
তবে কোন কোন সংগঠন কীভাবে জঙ্গি কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে এবং অধ্যাপক শফিউল কেন তাদের লক্ষ্যে পরিণত হলেন তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করেননি ওসি আলমগীর।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সুশান্ত সরকার বলেন, “গ্রেপ্তাররা সবাই জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পুলিশ তাদের জঙ্গি হিসেবেও সন্দেহ করছে। শফিউল হত্যায় জামায়াত ও তাদের নিয়ন্ত্রিত জঙ্গিদের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়ার কথাও বলেছে পুলিশ।
অবশ্য আসামিপক্ষের আইনজীবী একরামুল হকের দাবি, তার মক্কেলদের ‘হয়রানিমূলকভাবে’ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
“গ্রেপ্তাররা জামায়াতের সমর্থক হলেও সাধারণ মানুষ। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।”