রোববার গাইবান্ধায় পারিবারিক কবরস্থানে বাবাকে দাফনের পর সৌমিন সাহরিদ জাভিন বলেন, আমার বাবার হত্যাকাণ্ডে ইসলামী জঙ্গি সংগঠনগুলো জড়িত। আমি আমার বাবার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র সৌমিনের এই বক্তব্যের আগে ফেইসবুকের একটি পাতায় অধ্যাপক শফিউলকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে তাকে হত্যার দায় স্বীকার করা হয়।
শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় লালনভক্ত অধ্যাপক শফিউল ইসলাম লিলন খুন হওয়ার পাঁচ ঘণ্টা পর আনসার আল ইসলাম বাংলদেশ-২ নামে ওই ফেইসবুক পাতাটি খোলা হয়।
এতে বলা হয়েছে, “উই আর দি হেল্পারস অব শরিয়া ইন বাংলাদেশ। উই আর মুজাহিদিন সাবিলিল্লাহ।”
ওই পোস্টে কালো পশ্চাৎপটে শফিউল ইসলামের ছবি দিয়ে তার ওপর লাল রঙে আড়াআড়ি ‘ক্রস’ চিহ্ন দিয়ে কেটে দেওয়া হয়েছে।
ছবির নিচে লেখা হয়েছে- ‘এ কে এম শফিউল ইসলাম (ফাইল ক্লোজড)/ অপরাধ এপ্রিল ২০১০/ শাস্তি প্রদান নভেম্বর ২০১৪’।
আনসার আল ইসলাম নামে বাংলাদেশে কোনো সংগঠনের কার্যক্রম আছে কি না- সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ডে জঙ্গিদের সম্পৃক্ততা থাকতেও পারে। পুলিশ সব বিষয়ই খতিয়ে দেখছে।
শফিউল হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে রোববার বিকাল পর্যন্ত ছয়জনকে আটক করেছে রাজশাহী পুলিশ। এর মধ্যে একজন কলেজ অধ্যক্ষও রয়েছেন।
ক্যাম্পাস সংলগ্ন যে এলাকায় শফিউলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, ওই এলাকার কাছেই এক দশক আগে আরেক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. ইউনুসকে একইভাবে হত্যা করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের দায়ে দুই জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড হয়েছে।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শফিউলকে রোববার জোহরের নামাজের পর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শালমারা ইউনিয়নের হিয়াদপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তার বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়।
রাজশাহী থেকে রোববার ভোরে অধ্যাপক শফিউলের মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। লাশ দেখতে হাজার হাজার মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছিল।